যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাত হলে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন: মাদুরো

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক সংঘাত হলে ট্রাম্পের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ সংকটাপন্ন: মাদুরো

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ চালায়, তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের “শেষ” ডেকে আনতে পারে। তিনি বুধবার এক বক্তব্যে বলেন, কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠী ট্রাম্পকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চাইছে, যা তার নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক নামের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

মাদুরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতাধর মহল ভেনেজুয়েলাকে ব্যবহার করে ট্রাম্পকে রাজনৈতিকভাবে ধ্বংস করতে চাচ্ছে। এদের লক্ষ্য, ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প যেন তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল করে বসে। মাদুরোর ভাষ্য অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তার নেতৃত্ব এবং রাজনৈতিক পরিচয় উভয়েরই শেষ হয়ে যাবে।

প্রেসিডেন্ট মাদুরো আরও বলেন, এই উসকানি শুধুমাত্র প্রকাশ্য প্রতিপক্ষ থেকে নয়, ট্রাম্পের আশপাশের কিছু লোক থেকেও আসছে। তিনি অভিযোগ করেন, তারা ট্রাম্প-পরবর্তী সময়ের রাজনৈতিক হিসাব কষছে এবং তার ক্ষতি হলে তাদের কোনো সমস্যা হবে না। তবে মাদুরো কারা এই ‘শত্রু’ তা স্পষ্ট করেননি।

মাদুরো নিশ্চিত করেছেন, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুত। তার সরকারের অবস্থান অপরিবর্তিত—কূটনীতি ও মতৈক্যের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা হবে। তিনি জানান, দেশটি গত ১৬ সপ্তাহ ধরে “হুমকি, মানসিক আগ্রাসন ও নজরদারি” সহ্য করছে। এ সময়ে বলিভারিয়ান সশস্ত্র বাহিনী আরও সক্রিয় ও সংগঠিত হয়েছে, মিলিশিয়া সম্প্রসারিত ও প্রশিক্ষিত হয়েছে, এবং জনগণ শান্তিপূর্ণভাবে সামরিক পরিকল্পনাকে সমর্থন করছে।

এর আগে, গত রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে আলোচনা করার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ “ওরা কথা বলতে চায়।” তবে তিনি পরে ইঙ্গিত দেন, ভেনেজুয়েলাকে কেন্দ্র করে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি তিনি।

মাদুরোর এই মন্তব্য এবং ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়ার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হয় যে, ভেনেজুেলার রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতিমালা দুই দিকেই চাপ ও জটিলতা রয়েছে। এ পরিস্থিতি কূটনৈতিক ও সামরিক পর্যায়ে সম্ভাব্য উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিবেশী দেশগুলোর তদারকি এবং মধ্যস্থতা এ পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সশস্ত্র বাহিনীর গতিশীলতা দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। সামরিক বাহিনী ও মিলিশিয়ার প্রশিক্ষণ ও সম্প্রসারণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি ও প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে ভেনেজুয়েলার সরকারের কূটনৈতিক অবস্থান এবং সরাসরি আলোচনায় প্রস্তুতি দেশটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সামরিক পদক্ষেপের পথে এগোয়, তবে তা শুধু দুই দেশের সম্পর্ককে নয়, আন্তর্জাতিক কূটনীতিকেও প্রভাবিত করবে। সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাব্য ফলাফল, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চাপ, এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ভবিষ্যতে মার্কিন নেতৃত্বের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

আন্তর্জাতিক