নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালীর সেনবাগ আনসার–ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকে প্রায় ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকার জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনার পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও বর্তমান সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে নতুন একটি মামলা দায়ের করেছে। বুধবার (১৯ নভেম্বর) নোয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক চিন্ময় চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। মামলাটি সোমবার (১৭ নভেম্বর) নোয়াখালী স্পেশাল সিনিয়র জজ আদালতে দায়ের করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা গেছে, চট্রগ্রামের বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী এলাকার নুর উল্যাহর ছেলে আলমগীর সেনবাগ শাখায় প্রথমে ২০১৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত এবং পরে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত থাকার সময় ৮৯টি ভুয়া ঋণ বিতরণ দেখিয়ে প্রায় ১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় নোয়াখালী দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল নোমান সোমবার (১৭ নভেম্বর) জেলা শহরের দত্তেরহাট শাখায় প্রায় ৭ কোটি টাকার জালিয়াতি ও আত্মসাতের ঘটনায় আলমগীরের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করেছিলেন। প্রথম মামলার তথ্য অনুযায়ী, আলমগীর ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং ২০২০ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার ও সাবেক ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনজন ভুয়া ঋণ গ্রহীতার মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে প্রায় ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
নোয়াখালী দুদকের উপসহকারী পরিচালক চিন্ময় চক্রবর্তী জানান, দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের নির্দেশে গত ২০ অক্টোবর ব্যাংক শাখায় অভিযানে গিয়ে কর্মকর্তারা বিভিন্ন রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাই করেন। অভিযানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক উপস্থিত না থাকলেও সংরক্ষিত নথিতে অসংখ্য অনিয়ম ধরা পড়ে। ব্যাংকের বিভিন্ন রেকর্ডে ভুয়া দলিল, জাল স্বাক্ষর ও জালিয়াতির স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদক এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করছে। আইন অনুযায়ী জালিয়াতি ও আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মামলার প্রেক্ষাপট ও প্রমাণসমূহ বিচারিক প্রক্রিয়ায় বিবেচিত হবে, এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকিং ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে আরও পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করতে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করার পাশাপাশি ঋণ বিতরণের প্রক্রিয়ায় আরও স্বচ্ছতা আনা হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এতে ব্যাংকের আর্থিক সম্পদের সুরক্ষা এবং সাধারণ জনগণের আস্থা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা সম্ভব হবে।


