বিজবিডিনিউজ ডেস্ক
ঢাকা: দৈনিক ভোরের কাগজের অনলাইন এডিটর মিজানুর রহমান সোহেলকে রাজধানীর বাড্ডা থেকে ডিবি (গোয়েন্দা পুলিশ) তুলে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার ঘটনায় নিজেকে সম্পূর্ণভাবে অব্যাহতি দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিনের মাধ্যমে বুধবার (১৯ নভেম্বর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ দাবি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাতের দিকে ডিবির একটি দল সোহেলকে তার বাসা থেকে কার্যালয়ে নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদ পরিচালনা করে। এই ঘটনায় বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যবকে জড়িয়ে একটি ভিত্তিহীন প্রচারণা চালানো হয়েছে। তিনি স্পষ্ট করেছেন যে, এনইআইআর বাস্তবায়ন বা সরকারি কোনো কার্যক্রমে তার ব্যক্তিগত কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এবং তিনি জিজ্ঞাসাবাদ বা সাংবাদিক সোহেলের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেননি।
বিশেষ সহকারী জানান, রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার অবৈধ হ্যান্ডসেট নিয়ন্ত্রণ ও এনইআইআর বাস্তবায়ন করছে। এ বিষয়ে বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারপরও কিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টের ভিত্তিতে তার নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে এবং তার সঙ্গে কোনো ধরনের পেশাগত বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “আমার বক্তব্য অনভিপ্রেত। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার কাছ থেকে সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই ধরনের অসত্য তথ্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।”
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা গেছে, সাংবাদিক সোহেলের স্ত্রী সুমাইয়া সীমা অভিযোগ করেছেন, মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাঁচজন ডিবি পোশাকধারী ব্যক্তি বাসায় এসে সোহেলকে নিয়ে যান। তাদের মধ্যে একজন নিজেকে আশরাফুল পরিচয় দিয়ে জানান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান সোহেলের সঙ্গে কথা বলতে চান এবং তিনি সাময়িকভাবে নেয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাকে বাসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে, বুধবার (১৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাংবাদিক সোহেলকে তার পেশাগত সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রশাসনিক ও সাংবাদিক মহলে নজর পড়েছে যে, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে অযথা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ ধরনের বিভ্রান্তি রোধের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আগামীতে কেউ এ ধরনের তথ্যের দিকে বিভ্রান্ত হবেন না।
জানাগেছে, এই ঘটনায় সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা বিষয়ক বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া নিয়ে দেশব্যাপী পর্যবেক্ষণ শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি মনিটর করছে এবং সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।


