জেলা প্রতিনিধি
ময়মনসিংহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সদস্য উম্মা উসওয়াতুন রাফিয়ার বাসায় ককটেল নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রলীগের চার কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে মামলার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার দিন বুধবার রাত ৩টার দিকে ময়মনসিংহ নগরের ঢোলাদিয়া এলাকার রাফিয়ার বাসায় ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এর পর বৃহস্পতিবার বিকেলে রাফিয়ার ভাই খন্দকার জুলকারনাইন কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রেকর্ড করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে পৃথক অভিযানে আসামিদের গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নগরের কেওয়াটখালী এলাকার মো. মাসুদ রানা (৪৫), আকুয়া বোর্ডঘর এলাকার মো. আরিফ (৩০), মো. বিপুল (২১) ও আকুয়া ওয়্যারলেছ গেট এলাকার মো. রাজন (১৯)। পুলিশ জানায়, তারা সক্রিয়ভাবে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত আছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় কোনো প্রাণহানি ঘটেনি এবং স্থানীয় মানুষ ও ভবনের ক্ষতি সীমিত হয়েছে। তবে এ ধরনের ঘটনা এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি জোরালোভাবে পর্যবেক্ষণের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে।
ময়মনসিংহ শহরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সহিংসতা ও বিরোধ মূলত পারস্পরিক প্রভাব বিস্তার ও নির্বাচনী প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত। এ ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি রোধে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই ঘটনায় দায়ীদের গ্রেপ্তার ও বিচার প্রক্রিয়া স্থানীয় প্রশাসনের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার প্রতিফলন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য তারা এলাকার সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পর্যবেক্ষণ এবং ফাঁকি-ফোঁটা অভিযান অব্যাহত রাখছে।
মামলার তদন্ত চলমান থাকায় পুলিশের তদারকিতে আসামিদের বিরুদ্ধে আরও প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে, স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহিংসতার প্রভাব মোকাবেলায় সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দিকেও গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।
ময়মনসিংহে রাজনৈতিক সহিংসতার এ ঘটনা স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও ছাত্ররাজনীতির গঠন সম্পর্কে নতুন প্রশ্ন তুলেছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধ ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বজায় রাখার জন্য প্রশাসনের পদক্ষেপ এবং স্থানীয় কমিউনিটির সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


