বাংলাদেশ জয়ী, সিরিজ নিশ্চিত করেছে আইরিশদের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশ জয়ী, সিরিজ নিশ্চিত করেছে আইরিশদের বিরুদ্ধে

 

খেলাধুলা ডেস্ক

মিরপুর: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে জয় নিশ্চিত করেছে। চতুর্থ দিনের খেলা শেষে সফরকারীরা ৬ উইকেটে ১৭৬ রান নিয়ে দিন শেষ করলেও, লাল বলের দুই টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে। সিরিজের প্রথম টেস্ট সিলেটে ইনিংস ব্যবধানে জয়ী হয় বাংলাদেশ, যা তাদের নির্ভরযোগ্য দলগত পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।

চতুর্থ দিনে বাংলাদেশের বোলাররা আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিংকে কার্যকরভাবে আটকে রাখে। দিনের ১৪তম ওভারে তাইজুল ইসলাম অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে এলবিডব্লিউ করে বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টেস্টে ২৫০তম উইকেট অর্জন করেন। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ জর্ডান নিলকে বোল্ড করে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের প্রথম উইকেট অর্জন করেন। নবম উইকেটে গ্যাভিন হোয়ের সঙ্গে জুটি বাঁধা ক্যাম্ফারকে লেগ বিফোরে ফেরানো হাসান মুরাদ ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। মুরাদ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ এবং ম্যাচে ৬ উইকেট শিকার করেন, যা তাকে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

ব্যাটিংয়ে আয়ারল্যান্ডের ক্যাম্ফার নজরকাড়া পারফরম্যান্স দেখান। চতুর্থ ইনিংসে ২৫৯ বলে ৭১ রান অপরাজিত থেকে তিনি বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ২১২ বল খেলার রেকর্ড ছাড়িয়ে যান। ক্যাম্ফার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের সঙ্গে ১০৫ বলে ২৬, জর্ডান নিলের সঙ্গে ৮৫ বলে ৪৮ এবং নবম উইকেটে হোয়ের সঙ্গে ১৯১ বলে ৫৪ রানের জুটি গড়ে দলের পক্ষে ম্যাচে স্থিতিশীলতা রক্ষা করেন। এই ইনিংস তার টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি, যদিও তিনি আগেও একটি আন্তর্জাতিক টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা চতুর্থ দিনে ৪ উইকেটে ২৯৭ রান করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে। প্রথম ইনিংসের ২১১ রান যোগ করলে সফরকারীদের জন্য জুটানো লক্ষ্য দাঁড়ায় ৫০৯ রান। এই চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা নির্ধারিত সময়ের বেশির ভাগে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তবে বাংলাদেশের নিয়মিত বোলারদের কার্যকরী বোলিংতে ৬ উইকেটে ১৭৬ রান করার মধ্য দিয়ে দিন শেষ হয়।

টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ দলের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ১০০তম ম্যাচ খেলেন। এই মাইলফলক ম্যাচে তিনি রেকর্ডরাঙা ব্যাটিং প্রদর্শন করেন। শততম টেস্টে দুই ইনিংসে ১০৬ ও ৫৩* রানের ইনিংস খেলে মুশফিক বিশ্বে মাত্র দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে এমন মাইলফলক অর্জন করেন এবং ম্যাচসেরার পুরস্কার অর্জন করেন।

সিরিজের ফলাফল বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা দীর্ঘদিনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেছে। বোলিং ও ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও দলগত সমন্বয়ের মাধ্যমে লাল বলের টেস্টে দাপট দেখিয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের মাধ্যমে দলের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যৎ আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ ও আসন্ন প্রতিযোগিতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের বোলিং দলে তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও হাসান মুরাদের সক্রিয় ভূমিকা ছাড়াও আয়ারল্যান্ডের নির্দিষ্ট ব্যাটসম্যানদের প্রতিরোধ ব্যর্থ করে দলের জয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিপক্ষের শক্তিশালী জুটি ভাঙার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের বোলাররা কার্যকর প্রভাব সৃষ্টি করেছেন। টেস্ট সিরিজে এই জয় দলের কৌশলগত পরিকল্পনা ও শক্তিশালী একাদশ গঠনের প্রমাণ বহন করছে।

শেষ পর্যন্ত, বাংলাদেশ দলের ধারাবাহিক সাফল্য ও অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের মাইলফলক অর্জন সিরিজকে স্মরণীয় করেছে। আয়ারল্যান্ডের প্রতিরোধের মধ্যেও দলগত সমন্বয় ও ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের সমন্বয়ে বাংলাদেশ জয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে এবং আগামী আন্তর্জাতিক টেস্টে আত্মবিশ্বাসের সহিত অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারবে।

খেলাধূলা