সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল হাজিরা আবেদন ট্রাইব্যুনালে প্রত্যাখ্যাত

সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল হাজিরা আবেদন ট্রাইব্যুনালে প্রত্যাখ্যাত

আইন আদালত ডেস্ক

রোববার (২৩ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর শুনানিতে মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় সেনা কর্মকর্তাদের ভার্চুয়াল হাজিরার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল সদস্যরা উল্লেখ করেছেন যে, “বিভিন্ন মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি কারাগারে রয়েছেন এবং তিনি সশরীরে হাজির হচ্ছেন। সাবেক কয়েকজন মন্ত্রীও নিয়মিত হাজিরা দিচ্ছেন। সেনা কর্মকর্তারা কেন এর বাইরে থাকবেন? আইন সবার জন্য সমান।”

শুনানি চলাকালে ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের প্যানেল এ দিন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ধার্য করেন। প্যানেলের অন্য সদস্য ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

দুই মামলার আওতায় সেনা কর্মকর্তারা সরাসরি হাজিরা না দিয়ে ভার্চুয়াল উপস্থিতির আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহ। আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়, যদি হাজিরার ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা থাকে, তবে ট্রাইব্যুনাল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া পরবর্তী শুনানি তারিখে মামলাগুলো কার্যকরভাবে পরিচালনার কথাও বলা হয়েছে।

আইনজীবী মাসুদ সালাহউদ্দিন জানান, তারা ভার্চুয়াল হাজিরার জন্য আবেদন করলেও প্রসিকিউশনের সময় চাওয়ার কারণে শুনানি পরবর্তীতে নির্ধারণ করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের মন্তব্য অনুযায়ী, আইন সবার জন্য সমান এবং কোনো ব্যক্তির জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে না। আগামী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে ৩ ও ৭ ডিসেম্বর।

মানবতাবিরোধী অপরাধের দুটি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন র‍্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‍্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।

ট্রাইব্যুনালের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে স্পষ্টভাবে বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, আইন প্রয়োগে কোনো ব্যক্তি বা পদবীকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে না এবং সব প্রার্থীর জন্য সমান মানদণ্ড প্রযোজ্য। এটি দেশের বিচারব্যবস্থায় ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।

আইন আদালত