বিনোদন ডেস্ক
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী সোমবার বিকেলে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্টে বলেন, সরকারে যোগ দেওয়ার পর গত চার দিন ছিল তার জন্য সবচেয়ে অস্বস্তিকর। তিনি জানান, বিভিন্ন সমালোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি সচেতনভাবে সরাসরি বিবৃতি না দিয়ে কাজের মাধ্যমে পরিস্থিতি পরিচালনার চেষ্টা করেছেন।
ফারুকী উল্লেখ করেন, বাউল শিল্পী আবুল সরকারের গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তখন মন্ত্রণালয় থেকে তাকে ভিডিও ক্লিপ পাঠানো হয় এবং পরিস্থিতির ঝুঁকি ও উত্তাপের দিকগুলো ব্যাখ্যা করা হয়। তিনি বলেন, যেকোনো ফৌজদারি অপরাধে পদক্ষেপ নেওয়ার মূল ভূমিকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের, এবং তার মন্ত্রণালয়ের বিশেষ কোনো ক্ষমতা নেই। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিক হিসেবে সবাইকে ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন।
ফারুকী আরও জানান, এই ঘটনার পর সমালোচনার কিছু প্যাটার্ন লক্ষ্য করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, সমালোচনার লক্ষ্য তার মন্ত্রণালয় নয় বরং নিজেকে, যা বিভিন্ন বিষয়ে তার মন্ত্রণালয়ের কাজকে ঘিরে তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে লালন শাহ সম্পর্কিত উদ্যোগ এবং সংস্কৃতি প্রচারকে কেন্দ্র করে সমালোচনা দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সম্ভব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে লালনকে জাতীয়ভাবে উদযাপন, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর উৎসব উদযাপন এবং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সমন্বয়ের প্রচেষ্টা।
উপদেষ্টা জানান, সমালোচনার এক ধরন এমনও রয়েছে যেখানে মন্ত্রণালয়ের কর্মকাণ্ডকে ভিন্নভাবে তোলা হচ্ছে, যেমন বাউলদের ওপর আক্রমণ বা অতীতের ইতিহাসের সঙ্গে বর্তমানের উদ্যোগকে মিশিয়ে সমালোচনা। তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় বহুত্ববাদ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সাংস্কৃতিক উদ্যোগে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, ৫৪ বছরে প্রথমবার সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন ধর্ম ও জাতির উৎসব উদযাপন, এবং লালন শাহ ও সাধুসঙ্গকে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি দেওয়া।
ফারুকী মন্তব্য করেন, সরকারের করণীয় বিষয়টি স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, মেয়েদের কোনো ফুটবল খেলা বন্ধ হলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং খেলার সুযোগ বৃদ্ধি করা উচিত। তিনি বলেন, লালন জাতীয়ভাবে উদযাপন এবং সরকারি উদ্যোগে সাধুসঙ্গ বাড়ানো কোনো অপরাধ নয়।
উপদেষ্টা পোস্টে উল্লেখ করেন, বাউলদের ওপর আক্রমণ ও ড্রোন শো নিয়ে তৈরি সমালোচনা অনুচিত। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বড় ইভেন্টে ড্রোন শো ব্যবহৃত হচ্ছে এবং বাংলাদেশেও এটি নতুন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে চালু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতেও বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও সাংস্কৃতিক উৎসবে ড্রোন শো ব্যবহার অব্যাহত থাকবে।
ফারুকী জোর দিয়ে বলেন, ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতির মাধ্যমে দেশকে সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তিনি উল্লেখ করেন, তার মন্ত্রণালয় বহুত্ববাদ এবং সাংস্কৃতিক সম্প্রীতির প্রতি অবস্থান নিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও একই নীতি অব্যাহত থাকবে।


