জাতীয় ডেস্ক
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের মধ্যে ইতিহাসে সবচেয়ে স্বচ্ছ নির্বাচন হবে। তিনি বলেন, নির্বাচনের তপশিল ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে ঘোষণা করা হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে দেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সংলাপে ইসি সানাউল্লাহ এ মন্তব্য করেন। সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সংলাপের প্রথম পর্বে ৪০টি দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
ইসি সানাউল্লাহ বলেন, “২০২৬ সালের সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশে সবচেয়ে স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এর ব্যত্যয় ঘটাতে চাইলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।” তিনি আরও জানিয়েছেন, ডিসেম্বর মাসের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষণা করা হবে এবং তার ১০ দিনের মধ্যে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোকে কমিশনে তাদের তালিকা জমা দিতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে এবং কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব করা যাবে না। পর্যবেক্ষকরা ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। মানহীন পর্যবেক্ষক নির্বাচনের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
ইসি আরও উল্লেখ করেন, বিদেশি কেউ দেশি সংস্থার হয়ে পর্যবেক্ষক হিসেবে অংশ নিতে পারবেন না। তাদেরকে আইন এবং বিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে। ফ্রিল্যান্স পর্যবেক্ষক হিসেবে কেউ অংশ নিতে পারবে না। নির্বাচনের আগে, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচনের পরের দিন এই তিনদিন পর্যবেক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। ভুয়া বা অননুমোদিত পর্যবেক্ষক শনাক্ত করতে কমিশন পরিচয়পত্রে কিউআর কোড ব্যবহার করবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করতে কমিশন বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। এতে নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া আরও সুদৃঢ় হবে। পর্যবেক্ষকরা নির্বাচনী কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ এবং সম্ভাব্য অসঙ্গতি রিপোর্ট করার মাধ্যমে ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের সব নির্বাচনী কেন্দ্র পর্যবেক্ষণের আওতায় থাকবে। স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা নির্বাচনের প্রাকপ্রস্তুতি, ভোটগ্রহণ এবং ভোট পরবর্তী কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করবেন। এছাড়া, ভোটগ্রহণের সময় নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও পর্যবেক্ষকরা নজর রাখবেন।
এ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন আশা করছে, ভোটারদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের হার বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া, নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ব্যবহার এবং পরিচয়পত্রে কিউআর কোডের মাধ্যমে ভুয়া পর্যবেক্ষক শনাক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৬ সালের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তপশিল ঘোষণা এবং পর্যবেক্ষক তালিকা জমা দেওয়ার সময়সীমা নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশন একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।


