অর্থনীতি ডেস্ক
আগামী মৌসুমে কৃষি উপকরণের স্থিতিশীল সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার আজ দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই অনুমোদনের মাধ্যমে মোট ৭৫ হাজার মেট্রিক টন সার ক্রয় করা হবে, যার মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯৯.৫০ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারের ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির ৪৭তম সভায় আজ এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় উভয় প্রস্তাবের বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়।
প্রথম প্রস্তাবটি শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) থেকে এসেছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ১০ম লট হিসেবে সৌদি আরবের স্যাবিক অ্যাগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ৪০ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। এই আমদানির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৯৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
অন্য প্রস্তাবে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) রাশিয়ার জেএসসি ফরেন ইকোনমিক করপোরেশন (প্রোডিনটর্গ) থেকে সরকারি পর্যায়ে (জি-টু-জি) ৭ম লট হিসেবে ৩৫ হাজার টন এমওপি সার আমদানি করবে। এ চুক্তির মূল্যও ১৯৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা নির্ধারিত হয়েছে।
কমিটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফসল উৎপাদনের ভরা মৌসুমে সার সরবরাহের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় আমদানি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই পদক্ষেপের ফলে দেশের কৃষি উৎপাদনে সম্ভাব্য ঘাটতি প্রতিরোধ করা যাবে এবং বাজারে সার সরবরাহে অব্যাহততা নিশ্চিত হবে।
সরকারি কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, এই সার আমদানির মাধ্যমে স্থানীয় কৃষকদের জন্য উৎপাদন খরচ কমানো এবং ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরাসরি সহায়তা প্রদান করা সম্ভব হবে। এছাড়া, আমদানিকৃত সার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দ্রুত বিতরণের জন্য পরিকল্পিত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার সরবরাহের স্থিতিশীলতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ধরনের আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ সার আমদানি করা হলে কৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে সরকার কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে।
ভবিষ্যতে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য এমন আমদানির ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি স্থানীয় সার উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপরও গুরুত্ব দেওয়া হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে দেশের কৃষি খাতকে আরও শক্তিশালী করবে।


