সরকারের সাত কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি

সরকারের সাত কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি

 

জাতীয় ডেস্ক

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় প্রশাসনের সাত কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের উপসচিব পদে উন্নীত করার পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (উপসচিব) হিসেবে নতুনভাবে নিয়োগ প্রদান করা হলো। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ রফিকুল হক স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পদোন্নতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে যে, সরকার নির্ধারিত বিধি-বিধান, যোগ্যতা, কর্মদক্ষতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে এই পদোন্নতি প্রদান করেছে। প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এই পদোন্নতি কার্যক্রম নিয়মিত মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে পরিচালিত হয়, যার লক্ষ্য সরকারি সেবার দক্ষতা বৃদ্ধি, নীতি-নির্ধারণী কাজে যথাযথ নেতৃত্ব নিশ্চিত করা এবং মাঠ প্রশাসন থেকে কেন্দ্রীয় প্রশাসন পর্যন্ত ধারাবাহিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা।

উপসচিব পদ বাংলাদেশ প্রশাসনিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর, যেখানে উন্নীত কর্মকর্তারা বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান বা বিশেষ প্রকল্পে নীতিগত ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন। সাধারণত সিনিয়র সহকারী সচিব বা সমমানের পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জনের পর কর্মকর্তারা এই পদে পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হন। পদোন্নতি প্রদানের ক্ষেত্রে বার্ষিক গোপনীয় রিপোর্ট (এএসসিআর), মন্ত্রণালয়ের মূল্যায়ন, প্রশাসনিক দক্ষতা, নেতৃত্বের যোগ্যতা এবং কাজের অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

নতুন পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা উপসচিব পদে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নীতিমালা বাস্তবায়ন, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় এবং সরকারি কর্মসূচি তদারকিতে উল্লেখযোগ্য দায়িত্ব পালন করবেন। তাদেরকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে প্রাথমিকভাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে তাদের পদায়ন করা হতে পারে। সাধারণত পদোন্নতির পর কর্মকর্তাদের নতুন কর্মস্থল নির্ধারণের জন্য একটি পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, এবং চূড়ান্তভাবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ তাদের স্থায়ী পদায়ন নির্ধারণ করে।

বাংলাদেশে প্রশাসনিক ক্যাডারসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় সেবার পদোন্নতি প্রক্রিয়া সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন নীতির অংশ। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মীদের ক্যারিয়ার উন্নয়ন নিশ্চিত করার পাশাপাশি সরকারি প্রশাসনের কাঠামোকে আধুনিক, কার্যকর ও দক্ষ রাখতে সরকার নিয়মিতভাবে পদোন্নতি প্রদান করে থাকে। বিশেষ করে উপসচিব পর্যায়ের পদোন্নতি কেন্দ্রীয় প্রশাসনের নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সক্ষমতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।

এ ধরনের পদোন্নতির ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে শূন্যপদ পূরণ হওয়া, কর্মকর্তাদের কর্মউদ্দীপনা বৃদ্ধি পাওয়া এবং প্রশাসনিক কাজের গতি ত্বরান্বিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তাঁদের কর্মঅভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করতে পারবেন। প্রশাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত পদোন্নতি সরকারি কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং নীতি বাস্তবায়নের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সাধারণত বছরে বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনিক প্রয়োজন ও শূন্যপদের ভিত্তিতে পদোন্নতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে থাকে। পদোন্নতির পর কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ, ওরিয়েন্টেশন এবং নতুন দায়িত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করাও প্রশাসনের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা দ্রুত সময়ে তাঁদের দায়িত্বভার গ্রহণের পর দায়িত্বপ্রাপ্ত দপ্তরে যোগদান করবেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সাত কর্মকর্তার এই পদোন্নতির মাধ্যমে সরকারের চলমান প্রশাসনিক সংস্কার ও দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় আরেকটি ধাপ সম্পন্ন হলো। ভবিষ্যতে প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আরও পদোন্নতি ও পুনর্বিন্যাসের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সেবার কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা সরকারি সেবার মানোন্নয়ন এবং নীতি বাস্তবায়নকে আরও গতিশীল করতে সহায়ক হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ