অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত শাহবাগের বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) একটি ভবনে বুধবার বেলা ১১টা ১৪ মিনিটের দিকে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। দ্রুত ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় আশপাশের এলাকাজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হলেও ফায়ার সার্ভিসের তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টা ২০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পেয়ে সাতটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। প্রাথমিক প্রচেষ্টার পর বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে সক্ষম হয় তারা। আগুনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতাল ভবনের এ ব্লকের চতুর্থ তলায় সীমাবদ্ধ ছিল বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত উদ্ধারকর্মীরা ভবনের ভেতরে অনুসন্ধান চালালেও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবুও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হওয়ার জন্য ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশে অতিরিক্ত তল্লাশি চালাচ্ছে।

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, শাহবাগ ফুটওভার ব্রিজের পাশ থেকে প্রথমে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যেই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ায় আশেপাশের মানুষ আগুনের বিষয়ে সতর্ক হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো পৌঁছে ভবনে প্রবেশ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে কার্যক্রম পরিচালনা করে।

অগ্নিকাণ্ডের ফলে চতুর্থ তলার কক্ষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে নিরূপণ করা যায়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনের ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক মূল্যায়ন শুরু করেছে এবং অগ্নিকাণ্ডের কারণ অনুসন্ধানে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ঘটনার পর হাসপাতাল ভবনে কিছু সময়ের জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলেও কর্তৃপক্ষের তৎপরতায় রোগী ও কর্মীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হলেও বড় ধরনের বিপর্যয় এড়ানো যায়। অগ্নিকাণ্ডে আক্রান্ত স্থানের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ভবনের ওই অংশে জনসাধারণের প্রবেশ সীমিত রাখা হয়েছে।

ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ভবনের ভেতরে দাহ্য পদার্থ বা বৈদ্যুতিক ত্রুটি থেকে আগুন ছড়িয়ে থাকতে পারে। তবে বিষয়টি নিশ্চিত করতে বিশেষজ্ঞ দল পরে বিস্তারিত তদন্ত পরিচালনা করবে। তদন্তে ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার বৈদ্যুতিক সংযোগ, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পর্যালোচনা করা হতে পারে।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি রাজধানীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটায় বিষয়টি ব্যাপক গুরুত্ব পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি ও বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন রয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো সম্ভব হয় এবং সম্ভাব্য ক্ষতি কমানো যায়।

ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত নজরদারি বজায় রেখেছে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে প্রয়োজনীয় মেরামত শেষে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের কার্যক্রম পুনরায় শুরু করা হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ