পাকিস্তানি সেনাদের বান্নু অভিযান: ২২ সন্ত্রাসী নিহত, আফগানিস্তান পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাবের হুমকি

পাকিস্তানি সেনাদের বান্নু অভিযান: ২২ সন্ত্রাসী নিহত, আফগানিস্তান পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাবের হুমকি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তানের আইএসপিআর একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, বান্নু এলাকায় ভারতীয় প্রক্সি ফিতনা আল-খারেজির উপস্থিতির খবর পাওয়ার পর অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযানের সময় সংঘটিত গোলাগুলিতে ২২ জন সন্ত্রাসী নিহত হন। এছাড়া, বান্নু এলাকায় আরও কোনো সন্ত্রাসী থাকলে তাদের শনাক্ত ও ধ্বংস করতে ‘পরিচ্ছন্ন অভিযান’ চালানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।

অভিযানটি পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই ধরনের অভিযানগুলোর লক্ষ্য স্থানীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা এবং সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধ করা।

একই সময়ে, পাকিস্তানের বিমান হামলার জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আফগানিস্তান। মঙ্গলবার রাতে আফগানিস্তানের খোস্ত প্রদেশে পাকিস্তান পরিচালিত বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৯ জন শিশু। আফগান তালেবান সরকার এ তথ্য জানিয়েছে, যদিও পাকিস্তান এই হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, অক্টোবর মাসে দুই দেশের মধ্যে একটি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটেছিল। পরবর্তীতে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় সংঘর্ষ থামলেও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা রয়ে গেছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটি আত্মঘাতী হামলায় ছয়জন নিহত হওয়ার পর ইসলামাবাদ রাতে আফগানিস্তানে বিমান হামলা চালায়।

আফগান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, “আমাদের আকাশসীমা, অঞ্চল এবং জনগণকে রক্ষা করা আমাদের বৈধ অধিকার। প্রয়োজনীয় সময়ে পাকিস্তানকে উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।” এই হুমকি দুটি দেশের মধ্যে সীমান্ত সংলগ্ন উত্তেজনার তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করতে পারে এবং সামরিক উত্তেজনা চলমান রাখতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বান্নু অভিযানের মতো সন্ত্রাসবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং পরবর্তী প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি অস্থিতিশীল থাকতে পারে। এছাড়া, উভয় দেশই আন্তর্জাতিকভাবে কূটনৈতিক ও মানবিক চাপের মুখোমুখি হতে পারে, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির কারণে।

সামরিক সূত্র বলছে, এই ধরনের অভিযান পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নীতি এবং সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের অংশ। তবে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সীমান্তবর্তী অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই ধরণের সংঘর্ষ ও বিমান হামলার কারণে মানবিক পরিস্থিতি নজরদারি করছে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা এবং প্রতিক্রিয়া সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি ও সীমান্ত সংলগ্ন সহযোগিতার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে।

সংক্ষেপে, বান্নু অভিযান ও আফগানিস্তানের প্রতিক্রিয়া দক্ষিণ এশিয়ার সীমান্ত সংলগ্ন নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হিসেবে সামনে এসেছে। উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংলাপ এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের সমন্বয় এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে।

আন্তর্জাতিক