লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগে অস্বাভাবিক ধস, অ্যানফিল্ডে পিএসভির কাছে ৪–১ হার

লিভারপুলের চ্যাম্পিয়নস লিগে অস্বাভাবিক ধস, অ্যানফিল্ডে পিএসভির কাছে ৪–১ হার

 

খেলাধুলা ডেস্ক

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও চ্যাম্পিয়নস লিগে একের পর এক হতাশাজনক ফলের মধ্য দিয়ে লিভারপুলের বর্তমান মৌসুমের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। অ্যানফিল্ডে পিএসভির বিপক্ষে বুধবার রাতের ম্যাচে ৪–১ গোলের পরাজয় তাদের বর্তমান চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে দুর্বল অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করেছে। সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হওয়া এই ফলাফল লিভারপুলের ধারাবাহিক সমস্যার পরিচায়ক হিসেবে ধরা হচ্ছে।

ম্যাচের শুরুতেই লিভারপুলের জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে ওঠে। মাত্র ছয় মিনিটের মধ্যে অধিনায়ক ভার্জিল ভ্যান ডাইক কর্নার থেকে অস্বাভাবিক হ্যান্ডবলের কারণে পেনাল্টি উপহার দেন। এই সুযোগ থেকে ইভান পেরিসিচ পিএসভিকে দ্রুত এগিয়ে নেন। যদিও ১০ মিনিটের মধ্যে লিভারপুল সমতা ফেরাতে সক্ষম হয়। কোডি গাকপোর শট ফিরে আসলে দোমিনিক সবোসলাই রিবাউন্ডে নেট খুঁজে নেন এবং চ্যাম্পিয়নস লিগে লিভারপুলের মোট গোলসংখ্যা পৌঁছে যায় ৫০০-এ।

প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যান ডাইকের হেড বারপোস্টে লেগে যাওয়ায় লিড নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়। বিরতির পর লিভারপুলের জন্য প্রকৃত বিপর্যয় শুরু হয়। ৫৬ মিনিটে মৌরো জুনিয়র বাম দিক থেকে চমৎকার ড্রাইভে ক্রস করলে গুয়ুস টিল সহজেই গোল করেন। ৭৩ মিনিটে রিকার্ডো পেপির শট পোস্টে ঠেকলেও রিবাউন্ড থেকে কুহাইব দ্রুইয়েখ গোল করে পিএসভির সুবিধা আরও বৃদ্ধি করেন। অতিরিক্ত সময়ে সার্জিনো ডেস্টের কাটব্যাক থেকে আবারও দ্রুইয়েখের গোল পিএসভিকে ৪–১ ব্যবধানে বিজয় নিশ্চিত করে।

লিভারপুলের এই পরাজয় তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা নির্দেশ করে। দল শেষ ১২ ম্যাচে ৯টিতে হেরেছে এবং টানা তিন ম্যাচে তিনটি করে গোল হজম করেছে, যা ১৯৯২ সালের পর প্রথমবারের মতো ঘটেছে। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, দলের ডিফেন্সিভ ও স্ট্র্যাটেজিক দুর্বলতা মৌসুমের শুরু থেকেই সমাধান করা প্রয়োজন।

চ্যাম্পিয়নস লিগ গ্রুপে লিভারপুলের অবস্থান এখন ১২তম স্থানে, যা তাদের কোয়ার্টার ফাইনাল বা সেমিফাইনাল সম্ভাবনার জন্য সংকেত হিসেবে ধরা হচ্ছে। সম্প্রতি লিভারপুলের বিভিন্ন খেলোয়াড়দের ফর্ম ও আঘাতের পরিস্থিতিও দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে ডিফেন্স ও মিডফিল্ডে সমন্বয়ের অভাব লক্ষ্য করা গেছে, যা প্রতিপক্ষের আক্রমণ মোকাবেলায় জটিলতা সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করছেন যে, লিভারপুলকে মৌসুমের বাকি সময় ধরে কৌশলগত পরিবর্তন এবং খেলোয়াড়দের মানসিক ও শারীরিক প্রস্তুতি উন্নত করতে হবে। পাশাপাশি, গ্রুপ পর্বে উচ্চমানের ফলাফল অর্জন করতে হলে ডিফেন্স ও এটাকের মধ্যে সমন্বয় ও দৃঢ়তার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দল যদি এই সমস্যাগুলি সমাধান করতে ব্যর্থ হয়, তবে মৌসুমের শেষ দিকে বড় ধরনের হতাশাজনক ফলাফলের মুখোমুখি হতে পারে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে লিভারপুল সমর্থকদের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে, দলকে আন্তর্জাতিক এবং ঘরের মাঠের প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। আগামী ম্যাচগুলো তাদের মৌসুমের দিকনির্দেশনা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

খেলাধূলা