অনলাইন ডেস্ক
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (এনসিএস) জানিয়েছে, গত ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার ভোরে মণিপুর, বঙ্গোপসাগর ও ভুটানে পৃথকভাবে তিনটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এসব ভূমিকম্পের ফলে বাংলাদেশসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়।
এনসিএস জানায়, মণিপুরের পশ্চিমাঞ্চলীয় নোনে ভূমিকম্পটি বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪২ মিনিটে সংঘটিত হয়। ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৩.৫ এবং এর উৎপত্তিস্থল ছিল ২৬ কিলোমিটার গভীরে। এর আগে, ভোর ২টা ৫৯ মিনিটে বঙ্গোপসাগরে ৪ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়, যার গভীরতা ছিল ১০ কিলোমিটার। একই দিনে বুধবার রাত ১১টা ৩২ মিনিটে ভুটানেও ৩ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
ভূমিকম্পের প্রভাবে বাংলাদেশে সীমান্তবর্তী এলাকায় কম্পন অনুভূত হলেও সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, সিলেটে কোনো ভূমিকম্প সরাসরি রেকর্ড করা হয়নি। তিনি জানান, সিলেট ও আশপাশের এলাকায় অনুভূত কম্পন মণিপুরের ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের প্রতিফলন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই কম্পনের তথ্য দিয়েছেন।
ভারত ও বাংলাদেশ সহ দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঘটনা সাধারণ হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা মানুষের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্ব ভারতের মণিপুর ও ভুটানীয় অংশ, এবং বঙ্গোপসাগরের তটবর্তী এলাকা ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল হিসেবে পরিচিত। ভূমিকম্পের মাত্রা সাধারণত ক্ষুদ্র হলেও এর উৎপত্তিস্থল ও ভূগর্ভস্থ গভীরতা অনুযায়ী কম্পনের প্রভাব প্রায়শই আশপাশের দেশেও অনুভূত হতে পারে।
বাংলাদেশে বিশেষ করে সিলেট, ময়মনসিংহ ও চট্টগ্রামের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো ভূমিকম্পের প্রভাবে বেশি স্পর্শকাতর। মণিপুর ও ভুটান থেকে আসা ভূমিকম্পের কম্পন প্রাথমিকভাবে কোনো ক্ষতি না করলেও ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষের সতর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
জানা যায়, বঙ্গোপসাগরের ভূমিকম্পগুলো সামুদ্রিক ক্রিয়াকলাপ ও তৎপরিপূর্ণ ফল্ট লাইনের কারণে হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত ভূমিকম্প মনিটরিং এবং দুর্যোগ প্রস্তুতির গুরুত্বের ওপর জোর দিচ্ছেন। স্থানীয় জনগণকে ভূমিকম্পের প্রাথমিক সতর্কতা ও নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর ফলে সিলেটসহ সীমান্তবর্তী এলাকা ও আশেপাশের অঞ্চলে মানুষ কিছুক্ষণ আতঙ্কিত হলেও কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে এই ধরনের ভূমিকম্পের তথ্য ও নজরদারি চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।
বাংলাদেশ ও ভারত-ভুটানের ভূমিকম্প তথ্য সংরক্ষণকারী সংস্থা ও আবহাওয়া অধিদফতর পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে, যাতে প্রয়োজন হলে জনসাধারণকে দ্রুত সতর্ক করা যায়।


