নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে পুনরায় করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তিনি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডা. জাহিদ হোসেন জানান, বেগম খালেদা জিয়াকে মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। মেডিকেল বোর্ডে দেশি ও বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন। তিনি আরও জানান, দলের পক্ষ থেকে দেশবাসীর কাছে বিএনপি চেয়ারপারসনের সুস্থতার জন্য দোয়া কামনা করা হয়েছে।
এর আগে, বেগম খালেদা জিয়ার চেস্টে (বুকে) ইনফেকশন এবং হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যার তথ্য প্রকাশ করেন তার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকী। রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে তিনি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এই রোগগুলির কারণে কিছুটা জটিল।
প্রসঙ্গত, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফিরোজা এলাকা থেকে বেগম খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত হন। এরপর সেখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের জন্য ভর্তি করা হয়। বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. আল মামুন ওই সময় জানান, বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের দীর্ঘদিনের চিকিৎসা ইতিহাস রয়েছে। পূর্বের রিপোর্ট অনুযায়ী, হৃদরোগ, শ্বাসনালি সংক্রান্ত সমস্যা এবং অন্যান্য জটিলতা রয়েছে। চিকিৎসকরা নিয়মিতভাবে তাঁর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করছেন।
সিসিইউতে ভর্তি থাকার ফলে বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা আরও নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধানে রাখা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, সঠিক পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকলে গুরুতর জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
উল্লেখযোগ্যভাবে, দেশে উচ্চপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠন এবং নিবিড় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া। এটি রোগীর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি ধারাবাহিকভাবে পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুযোগ করে দেয়। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, বেগম খালেদা জিয়ার বয়স এবং পূর্বের শারীরিক জটিলতা বিবেচনায় রাখা জরুরি, যাতে হঠাৎ কোন গুরুতর অবস্থা সৃষ্টি না হয়।
চিকিৎসকরা এখন প্রধানত হৃদরোগ, শ্বাসনালি সংক্রান্ত জটিলতা এবং সংক্রমণজনিত সমস্যার দিকে মনোনিবেশ করছেন। সিসিইউতে থাকা অবস্থায় রোগীর শারীরিক অবস্থার পরিবর্তন, হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ এবং ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি, প্রয়োজন অনুযায়ী ঔষধ ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা পরিস্থিতি দেশের রাজনৈতিক মহলেও সর্তক নজর রাখছে। দলীয় নেতৃত্ব এবং চিকিৎসকরা একযোগে এই পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নিয়মিত মেডিকেল বোর্ড পর্যবেক্ষণ এবং সিসিইউ ব্যবস্থার কারণে স্বাস্থ্যগত জটিলতা যথাসম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।


