ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে সংযম ও দায়িত্বশীলতার আহ্বান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের

ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধে সংযম ও দায়িত্বশীলতার আহ্বান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের

জাতীয় ডেস্ক

অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক পোস্টে সংযম, দায়িত্বশীলতা ও ন্যায়পরায়ণতার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি নাগরিকদের ‘জালিম’ বা অত্যাচারী আচরণ পরিহারের পরামর্শ দেন এবং ফ্যাসিবাদী প্রবণতা যাতে সমাজে জায়গা না পায়, সেদিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। শুক্রবার সকালে তার ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজে পোস্টটি প্রকাশিত হয়।

ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সংক্ষেপে বলেন, মজলুম অবস্থান থেকে অন্যায়কারীর ভূমিকায় চলে না যাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে। তিনি লিখেছেন যে, ফ্যাসিবাদী প্রবণতা যাতে সামাজিক বা রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। পোস্টে তিনি কোনো নির্দিষ্ট ঘটনা বা প্রেক্ষাপট উল্লেখ করেননি।

উপদেষ্টার এই আহ্বানটি সাম্প্রতিক সময়ে দেশে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে ঘটিত কিছু উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার প্রেক্ষাপটে প্রকাশিত হলেও তিনি তার বক্তব্যে তা স্পষ্ট করেননি। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় সামাজিক বিরোধ, প্রকাশ্য স্থানে অনুষ্ঠানে বাধার অভিযোগ, এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে বিঘ্নতার মতো বিষয়ে জনমনে আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। এসব ঘটনার ফলে সমাজে সহনশীলতা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং নাগরিক আচরণ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ ধরনের প্রেক্ষাপটে তার সতর্কবার্তা জনসাধারণের দায়িত্ববোধ জোরদারের একটি বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে যুব উন্নয়ন, ক্রীড়া ব্যবস্থাপনা এবং সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিভিন্ন বার্তায় জোর দিয়ে আসছেন। দায়িত্বশীল নাগরিক আচরণ এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিমিতি বজায় রাখা সম্পর্কেও তিনি প্রায়শই মত প্রকাশ করেন। তার সাম্প্রতিক পোস্টটিও একই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে তিনি সমাজে ন্যায়বিচার, সহনশীলতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।

দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো নাগরিকদের সহনশীল আচরণ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে আসছে। বিভিন্ন সামাজিক সংঘাতের ঘটনায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে নাগরিক সমাজও দায়িত্বশীল আচরণ বজায় রাখার পরামর্শ দিচ্ছে। এই অবস্থায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বার্তা জনমনে সচেতনতা বৃদ্ধির একটি দিক নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মন্তব্য ও নির্দেশনা বর্তমানে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেওয়া বার্তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় এগুলোর প্রভাবও বিস্তৃত হচ্ছে। বিশেষ করে সংবেদনশীল সময়ে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্তদের বক্তব্যকে অনেকেই দিকনির্দেশনা হিসেবে বিবেচনা করেন। উপদেষ্টার এই পোস্টও সেই প্রেক্ষাপটে গুরুত্ব পাচ্ছে।

সমাজে ফ্যাসিবাদী বা একচ্ছত্র আধিপত্যবাদী প্রবণতা প্রতিরোধে নাগরিক সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বিশেষজ্ঞরা প্রায়শই উল্লেখ করে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ এবং সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে ভিন্নমত ও বৈচিত্র্যের প্রতি সম্মান—এসবই সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মৌলিক উপাদান। দায়িত্বশীলতা ও সংযমের আহ্বান সমাজে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

ফেসবুক পোস্টটির মাধ্যমে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নাগরিকদের প্রতি যে আহ্বান জানিয়েছেন, তা সামগ্রিকভাবে সমাজে ন্যায়পরায়ণতা, সহনশীলতা এবং আইনানুগ আচরণ বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে। শান্তিপূর্ণ সামাজিক পরিবেশ বজায় রাখতে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের এমন বার্তা সময়োপযোগী বলে মনে করা হচ্ছে। ভবিষ্যৎ সামাজিক পরিস্থিতিতে এই বার্তার প্রতিক্রিয়া কেমন হয়, তা পর্যবেক্ষণের অপেক্ষায় রয়েছে সংশ্লিষ্ট পর্যায়গুলো।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ