খেলাধুলা ডেস্ক
প্রায় এক যুগ পর আয়োজিত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসরের নিলামে জাতীয় দলের অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে দলে ভিড়িয়েছে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। রোববার অনুষ্ঠিত এই নিলামে মুশফিককে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকেই দলে নেওয়া হয়। এর আগে দলটি সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। নিলাম শেষে তিনি জানান, মুশফিককে দলে ভেড়ানো ছিল দল ব্যবস্থাপনার সমন্বিত সিদ্ধান্ত।
নিলামের শুরুতে প্রথম ডাকেই কোনো দল মুশফিককে নেওয়ার আগ্রহ দেখায়নি। পরে নিলামের পরবর্তী ধাপে ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রেখে তাকে দলে নেয় রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটারকে দলে যুক্ত করার বিষয়টি টিম ম্যানেজমেন্ট, কোচ ও মালিক পক্ষের আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা হয়। বিপিএলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা এবং দেশীয় ক্রিকেটে তার অবদান মুশফিককে স্কোয়াডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যে পরিণত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মুশফিকের ক্যাটাগরি অবনমন না করেই দলে নেওয়ার সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক বলে মূল্যায়ন করা হয় দলটির পক্ষ থেকে। নাজমুল শান্ত জানান, এ ধরনের সিদ্ধান্ত খেলোয়াড়দের সম্মান প্রদর্শনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিলামে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দলের আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি সামনে আসে এবং পরবর্তীতে রাজশাহী দল সেই দৃষ্টিভঙ্গিকে মূল্যায়ন করে তাকে দলে নেয়। বিপিএলের নিলাম কাঠামোতে খেলোয়াড়দের ক্যাটাগরি পরিবর্তনের বিষয়টি দীর্ঘদিন আলোচনায় ছিল। এ প্রেক্ষাপটে কোনো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ক্যাটাগরি অপরিবর্তিত রেখে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা আসন্ন আসরে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের স্থানীয় স্কোয়াডে ঘরোয়া ক্রিকেটে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নাজমুল শান্ত জানান, দলে নেওয়া ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক ফর্ম এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে তাদের ধারাবাহিক সাফল্য স্কোয়াডকে শক্তিশালী করেছে। বিপিএলের মতো প্রতিযোগিতামূলক আসরে দেশীয় ক্রিকেটারদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে এমন ম্যাচগুলোয় যেখানে বিদেশি খেলোয়াড়দের উপস্থিতি সীমিত থাকে বা দল কৌশলগতভাবে স্থানীয় খেলোয়াড়দের ওপর নির্ভর করে থাকে।
বিপিএলের দ্বাদশ আসর সামনে রেখে দলগুলোর প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। নিলাম শেষে প্রতিটি দলই তাদের স্কোয়াড পূর্ণাঙ্গ করেছে এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের স্কোয়াডেও বিভিন্ন বিভাগে অভিজ্ঞতা ও উদীয়মান প্রতিভার সমন্বয় দেখা যাচ্ছে। ব্যাটিং অর্ডারে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের পাশাপাশি রয়েছে তরুণদেরও উপস্থিতি। বোলিং বিভাগেও স্পিনার ও পেসারদের সমন্বয়ে বহুমুখী বিকল্প তৈরি হয়েছে।
মুশফিকুর রহিমের অন্তর্ভুক্তি রাজশাহীর মিডল অর্ডারকে আরও শক্তিশালী করবে বলে দলীয় কর্মকর্তারা ধারণা করছেন। বিপিএলের বিভিন্ন মৌসুমে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করা মুশফিক ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেটরক্ষক হিসেবে দলের ফিল্ডিং সেটআপকেও স্থিতিশীলতা প্রদান করতে পারবেন। তার অভিজ্ঞতা তরুণ ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি ও কৌশল নির্ধারণেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজশাহী ওয়ারিয়র্সের পূর্ণ স্কোয়াডে রয়েছেন—
নাজমুল হোসেন শান্ত, তানজিদ হাসান তামিম, মোহাম্মদ নওয়াজ, সাহিবজাদা ফারহান, তানজিম হাসান সাকিব, ইয়াসির আলী চৌধুরী, আকবর আলী, রিপন মন্ডল, জিসান আলম, হাসান মুরাদ, আবদুল গাফফার সাকলাইন, এসএম মেহেরব হোসেন, রবিউল ইসলাম, ওয়াসি সিদ্দিকী, মুশফিকুর রহিম, শাখির এইচ শুভ্র, মোহাম্মদ রুবেল, দুশান হেমন্থ ও জাহানদাদ খান।
বিপিএলের চলতি আসরে দলগুলোর স্কোয়াড ঘোষণার মাধ্যমে প্রতিযোগিতা আরও জমে উঠবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বছরের অন্যতম বড় ঘরোয়া ক্রিকেট আয়োজন হিসেবে বিপিএল দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। নিলামের মাধ্যমে দল গঠন সম্পন্ন হওয়ায় এখন নজর থাকবে প্রস্তুতি ম্যাচ, খেলোয়াড়দের ফিটনেস, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং টুর্নামেন্টের সূচি ঘোষণার দিকে।


