বিনোদন ডেস্ক
অস্ট্রিয়ার আলোচিত ফ্যাশন ইনফ্লুয়েন্সার স্টেফানি পিপার নিখোঁজ হওয়ার এক সপ্তাহের বেশি সময় পর সম্প্রতি তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ৩১ বছর বয়সী পিপারের মরদেহ একটি স্যুটকেসে রাখা অবস্থায় স্লোভেনিয়ার একটি জঙ্গলে পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে প্রধান অভিযুক্ত তার প্রাক্তন প্রেমিক, যিনি হত্যার পর ঘটনা স্বীকার করেছেন। হত্যার সঙ্গে তার দুই পুরুষ আত্মীয়কেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্টেফানি পিপার মূলত মেকআপ, ফ্যাশন ও সংগীত বিষয়ক কনটেন্ট তৈরি করতেন এবং সামাজিক মাধ্যমে তার বহুল জনপ্রিয়তা ছিল। তিনি ২৩ নভেম্বর একটি পার্টি থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পিপার পার্টি থেকে বাড়ি ফেরার সময় প্রথমে একজন বন্ধুকে মেসেজ করে জানান যে তিনি নিরাপদে পৌঁছেছেন। তবে পরবর্তী মেসেজে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন যে সিঁড়ির ঘরে কেউ আছেন।
স্থানীয় প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, নিখোঁজ হওয়ার সময় তারা বাড়িতে ঝগড়ার শব্দ শুনেছিলেন এবং পিপারের সাবেক প্রেমিককে ওই ভবনে উপস্থিত দেখতে পেয়েছিলেন। তদন্তে পুলিশ নিশ্চিত করেছে, প্রাথমিক অনুসন্ধানে হত্যাকাণ্ড শ্বাসরোধের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে এবং মৃত্যুর পরে মরদেহ স্যুটকেসে ভরে স্লোভেনিয়ার জঙ্গলে ফেলা হয়েছে।
পুলিশের তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত স্লোভেনিয়াতে গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের সময় তিনি স্লোভেনিয়া-অস্ট্রিয়া সীমান্তের কাছে একটি ক্যাসিনোর পার্কিং লটে তার গাড়িতে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। এই ঘটনার পরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত এবং তার আত্মীয়দের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশীয় আইন অনুযায়ী তদন্ত শুরু হয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট, পিপারের নিখোঁজ হওয়ার আগে-পরবর্তী সময় ও প্রমাণাদি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে শুরু করে হত্যাকাণ্ডের তদন্ত পর্যন্ত পুলিশ নানা সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। সূত্র অনুযায়ী, পিপারের সঙ্গে তার প্রাক্তন প্রেমিকের মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধ চলছিল। পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে অনুসন্ধান করছে এবং সামাজিক মাধ্যমে পিপারের জনপ্রিয়তা ও তার জীবনের বিভিন্ন যোগাযোগ সম্পর্কিত তথ্যও সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এই হত্যাকাণ্ড অস্ট্রিয়ার ফ্যাশন ও বিনোদন জগতকে শোকাহত করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত জীবনের সংরক্ষণের দিক থেকে নতুন সতর্কতার আভাস দিচ্ছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক সীমান্তবর্তী অঞ্চলে আইন প্রয়োগ ও অপরাধ তদন্তের জটিলতাও প্রতীয়মান হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত ও ঘটনার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, পুলিশ হত্যার পুরো চিত্র উদ্ঘাটন করতে এবং সকল প্রাসঙ্গিক তথ্য চূড়ান্তভাবে সংগ্রহ করতে বিভিন্ন বিভাগীয় টিমের মাধ্যমে কাজ করছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং আদালতে চার্জশীট দাখিলের প্রস্তুতি চলছে।


