আন্তর্জাতিক ডেস্ক
রাশিয়ান সেনারা পূর্ব ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্ক দখল করেছে বলে সোমবার (১ ডিসেম্বর) মস্কোতে জানানো হয়েছে। রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী, শহরটি দখলের ঘটনা তাদের জন্য সামরিকভাবে একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। যদিও ইউক্রেন এই দাবিকে অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, এটি যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাকে প্রভাবিত করার জন্য রাশিয়ার প্রচেষ্টা।
পোকরোভস্ক ও তার আশপাশের অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে তীব্র লড়াই চলছিল। রাশিয়ার সেনারা শহরটি দখলের প্রচেষ্টায় অংশ নেওয়ার সময় উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে। পাশাপাশি, ইউক্রেনের সেনারাও এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন। শহরটির কৌশলগত গুরুত্ব মূলত সড়ক ও রেল যোগাযোগের কারণে; এই সংযোগের মাধ্যমে ইউক্রেন রসদ সরবরাহ করে আসছিল। তবে রাশিয়ার ক্রমাগত ড্রোন হামলার ফলে সড়ক ও রেলপথ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইউক্রেনকে বিকল্প সরবরাহ পথ খুঁজতে হয়েছে।
রাশিয়ার দাবি জানানোর কিছু ঘণ্টা আগে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় যুদ্ধ বন্ধের আলোচনার জন্য বৈঠকে বসেন মার্কিন ও ইউক্রেনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। ইউক্রেনের অপতথ্য প্রতিরোধ কেন্দ্রের প্রধান আন্দ্রি কোভালেঙ্কো বলেছেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে আগামী কয়েক সপ্তাহে এ ধরনের তথ্য প্রচার করা হতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায় প্রভাব বিস্তারের জন্য এবং পশ্চিমা দেশগুলোর দৃষ্টিতে তথ্য ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য থাকতে পারে।
সোমবার সকালে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী জানায়, প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও তাদের সেনারা পোকরোভস্ক এবং আশপাশের অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রেখেছে এবং রুশ বাহিনীর আক্রমণ প্রতিহত করছে। এর আগে রোববার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধক্ষেত্রে সেনাদের সঙ্গে দেখা করেন। ওই সময় দেশটির সেনাপ্রধান ভেলারি গেরাসিমোভ শহরটি দখল করার তথ্য পুতিনকে জানান।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের দপ্তরের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, পোকরোভস্ক সিটি সেন্টারে রাশিয়ার সেনারা পতাকা উত্তোলন করছেন। এটি আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, রাশিয়ার জন্য একটি কৌশলগত সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিস্থিতি এখনও পরিবর্তনশীল এবং উভয় পক্ষের দাবি ও তথ্য যাচাই প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে।
পোকরোভস্ক দখল করলে রাশিয়ার সামরিক পরিকল্পনায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। শহরটি পূর্ব ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ও রসদ সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হওয়ায়, এটি নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে রাশিয়া যুদ্ধক্ষেত্রে সাময়িক সুবিধা অর্জন করতে পারে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে বিকল্প সরবরাহ পথ ব্যবস্থাপনা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় থাকায় সামগ্রিক কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা এখনও বিদ্যমান।


