খেলাধুলা ডেস্ক
ভারতের ঘরের মাটিতে টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার ঘটনা দেশব্যাপী ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীরের সমালোচনা তীব্র হয়েছে। বিষয়টি আদালতের এক মামলার শুনানিতে পর্যন্ত এসেছে, যেখানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ ভারতীয় দলের লাল বলের ক্রিকেটে অব্যবস্থাপনার উদাহরণ হিসেবে গম্ভীরকে উল্লেখ করেছেন।
বিচারপতির মন্তব্য অনুযায়ী, ক্রিকেটের একদিন ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বেশি মনোযোগ দেওয়ার কারণে টেস্ট ম্যাচে ফলাফল ব্যর্থ হচ্ছে। শুনানির সময় আইনজীবী মুকুল রোহতগির সঙ্গে আলাপচারিতার প্রেক্ষাপটে গম্ভীরের প্রসঙ্গ টানা হয়। তিনি বলেন, “আপনি যখন টি-টোয়েন্টি ও একদিনের ক্রিকেটে বেশি মন দেন, তখনই টেস্ট ম্যাচ হারেন।” এই বক্তব্যের ভিডিও ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে।
গৌতম গম্ভীর ভারতের কোচ হওয়ার পর সাদা বলের ক্রিকেটে দলের পারফরম্যান্স তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এশিয়া কাপসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারত তার নেতৃত্বে সফল হয়েছে। আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও ভারতকে অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। তবে লাল বলের ক্রিকেটে পারফরম্যান্স খারাপ হওয়ায় সমালোচনা বেড়েই চলেছে।
গত এক বছরে টেস্ট ক্রিকেটে ভারতীয় দলের অর্জন উদ্বেগজনক। ইংল্যান্ডে সিরিজ ড্র হয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় হেরেছে, এবং সর্বশেষ ভারতের মাটিতে নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে। এই ব্যর্থতা গম্ভীরের কোচিং দক্ষতার উপর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এবং কিছু ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ও সমর্থক তার পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
আইনজীবী মুকুল রোহতগি জানান, গম্ভীরের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তার সরাসরি আলাপ হয়েছে। তিনি বলেন, “আপনাকে জানাতে চাই যে ভারতীয় দলের প্রধান কোচ গম্ভীর আমার মক্কেল ও খুব ভালো বন্ধু। আজ সকালেই আমি ওকে ফোন করেছিলাম। বললাম, গোটা দেশ বলছে যে, যদি দেশের পিচেই তোমরা ম্যাচ না জিততে পারো, তা হলে তোমার সরে যাওয়া উচিত।” এই মন্তব্যের পরে বিচারপতি আর কোন মন্তব্য করেননি।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, লাল বলের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের এই দুর্বলতা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে। টেস্ট ফরম্যাট আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিং, খেলোয়াড় উন্নয়ন এবং দেশীয় ক্রিকেটের ধারাবাহিকতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাদা বলের ক্রিকেটে সফলতা থাকা সত্ত্বেও লাল বলের এই দুর্বলতা ভারতীয় ক্রিকেটের সামগ্রিক প্রভাবকে প্রভাবিত করছে।
এই পরিস্থিতিতে বোর্ড ও কোচিং স্টাফকে সমন্বিতভাবে টেস্ট ক্রিকেটের জন্য কার্যকর কৌশল এবং খেলোয়াড়দের মানোন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। বিশেষ করে ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশের মতো পরাজয় পুনরায় ঘটানো রোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।


