সিটি ব্যাংকে মিজানুর রশীদ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের চিফ বিজনেস অফিসার হিসেবে নিয়োগ

সিটি ব্যাংকে মিজানুর রশীদ উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের চিফ বিজনেস অফিসার হিসেবে নিয়োগ

 

অর্থনীতি ডেস্ক

সিটি ব্যাংক তাদের ডিজিটাল ব্যাংকিং কার্যক্রম জোরদার করতে মিজানুর রশীদকে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ও চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও), ডিজিটাল ব্যাংকিং হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ব্যাংকটি জানায়, অভিজ্ঞ এই পেশাজীবী আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা ফিনটেক ও ভোক্তাপণ্য খাতে দীর্ঘ কর্মজীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সিটি ব্যাংকের চলমান ও ভবিষ্যৎ ডিজিটাল রূপান্তর কার্যক্রমে ভূমিকা রাখবেন বলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ব্যাংকটির মতে, ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ, প্রযুক্তিনির্ভর গ্রাহকসেবা উন্নয়ন এবং উদ্ভাবনী আর্থিক সমাধান প্রবর্তনে তাঁর অভিজ্ঞতা প্রতিষ্ঠানটির কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হবে।

মিজানুর রশীদ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে করপোরেট ম্যানেজমেন্ট, পণ্যবাজার সম্প্রসারণ, কৌশলগত পরিকল্পনা ও গ্রাহকসেবা উন্নয়ন–বিষয়ক দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর পেশাজীবনের একটি বড় অংশ কেটেছে ফিনটেক খাতে, যেখানে তিনি প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবার বিস্তার এবং ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করেছেন।

তিনি বিকাশ লিমিটেডে চিফ কমার্শিয়াল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেমকে সুসংহত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। দেশের মোবাইল আর্থিক সেবা খাতে গ্রাহককেন্দ্রিক সেবা বিন্যাস, পণ্য উন্নয়ন ও বাজার সম্প্রসারণে তাঁর নেতৃত্ব সংশ্লিষ্ট খাতের প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এ অভিজ্ঞতা সিটি ব্যাংকের ডিজিটাল ব্যাংকিং শাখায় নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে।

বহুজাতিক কোম্পানিতে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও উপসাগরীয় অঞ্চলে ইউনিলিভারের বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের দায়িত্ব পালন করেন। সাপ্লাই চেইন, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ–সংক্রান্ত দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে তিনি বহুমাত্রিক ব্যবস্থাপনা দক্ষতা অর্জন করেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশের ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো–তেও বিভিন্ন পদে কাজ করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানটির বাজার কৌশল ও বাণিজ্যিক পরিকল্পনার উন্নয়নে সম্পৃক্ত ছিলেন।

সিটি ব্যাংক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ডিজিটাল সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভিন্ন প্রযুক্তি–নির্ভর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অনলাইন ব্যাংকিং, ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, গ্রাহক পরিচয় যাচাইয়ের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা, মোবাইল অ্যাপভিত্তিক সেবা এবং বিভিন্ন উদ্ভাবনী আর্থিক সমাধান চালুর মাধ্যমে ব্যাংকটি ডিজিটাল লেনদেনে গ্রাহক–বান্ধব পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। নতুন নিয়োগ ব্যাংকের এসব উদ্যোগ আরও দ্রুত বাস্তবায়নে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ডিজিটাল ব্যাংকিং খাত বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংকিং শিল্পের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল ক্ষেত্র। গ্রাহকদের প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক সেবার প্রতি নির্ভরতা বাড়ার পাশাপাশি নগদবিহীন লেনদেনের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডিজিটাল সেবা সম্প্রসারণ এখন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষত ফিনটেক কোম্পানি এবং প্রচলিত ব্যাংকের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়ার ফলে ব্যাংকিং খাত ডিজিটাল সমাধানকে কেন্দ্র করেই নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এ প্রেক্ষাপটে দক্ষ নেতৃত্ব ব্যাংকগুলোর কৌশল বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

সিটি ব্যাংকের মতে, মিজানুর রশীদের অভিজ্ঞতা ব্যাংকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। ডিজিটাল পেমেন্টের বিস্তার, স্বয়ংক্রিয় সেবা, গ্রাহকসেবার মানোন্নয়ন এবং নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ–সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোতে তাঁর নেতৃত্ব ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করতে পারে। পাশাপাশি, ব্যাংকটির ডিজিটাল রূপান্তর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তাঁর কৌশলগত দক্ষতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে বলে ব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা মনে করছেন।

মিজানুর রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। দীর্ঘ করপোরেট অভিজ্ঞতার পাশাপাশি দেশের ডিজিটাল আর্থিক সেবা খাতে তাঁর সম্পৃক্ততা তাঁকে ব্যাংকের নতুন দায়িত্বে স্বচ্ছন্দভাবে নেতৃত্ব দিতে সহায়তা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সিটি ব্যাংকের এই নিয়োগকে ব্যাংকটির চলমান ডিজিটালাইজেশন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী সময়ে ব্যাংকিং খাতে প্রযুক্তিনির্ভর সেবার চাহিদা আরও বাড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সেই প্রেক্ষাপটে নতুন নেতৃত্ব ব্যাংকের প্রতিযোগিতা ও গ্রাহকসেবা উন্নয়নে নতুন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ সংবাদ