খেলাধুলা ডেস্ক
স্বাধীনতার ৫৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে একসঙ্গে ৫৪ জন প্যারাট্রুপার পতাকা হাতে স্কাই ডাইভিং করে আন্তর্জাতিক রেকর্ড গড়েছেন। মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁও পুরোনো বিমানবন্দর সংলগ্ন প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রদর্শনী বিশ্বের বুকে সর্বাধিক পতাকা হাতে প্যারাস্যুটিংয়ের রেকর্ড হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
রেকর্ড স্থাপনে অংশ নেয় ‘টিম বাংলাদেশ’-এর ৫৪ জন প্যারাট্রুপার। এ সময় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেন। প্যারাট্রুপারদের প্রদর্শনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে আকাশে ফ্লাইপাস্ট মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বিভিন্ন বিমান ও হেলিকপ্টার মহড়ার মাধ্যমে আকাশে প্রদর্শন করে দর্শকদের মনোগ্রাহী অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
মহড়া এবং স্কাই ডাইভিং প্রদর্শনী দেখতে তেজগাঁওয়ের পুরোনো বিমানবন্দরে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। সকাল ১১টার দিকে আগারগাঁও সংলগ্ন পুরোনো বিমানবন্দর এলাকায় দর্শনার্থীদের দীর্ঘ সারি দেখা যায়। নিরাপত্তা তল্লাশির পর দর্শনার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং বিজিবি সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
এ ধরনের আয়োজন দেশের সামরিক প্রশিক্ষণ এবং প্যারাট্রুপার সক্ষমতা প্রদর্শনের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সামরিক শক্তি ও প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে পরিচিত করানোর উদ্দেশ্যও বহন করে। পতাকা হাতে একসঙ্গে প্যারাস্যুটিংয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা একটি যুগান্তকারী উদ্যোগের সাক্ষ্য দেন, যা দেশের ইতিহাসে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
সশস্ত্র বাহিনীর এসব কার্যক্রম জাতীয় উদযাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে পরিকল্পিত, যা স্বাধীনতার গুরুত্ব এবং সামরিক প্রস্তুতি উভয় ক্ষেত্রেই জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। আয়োজনটি দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা ও প্যারাট্রুপার বাহিনীর প্রশিক্ষণমানের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই আকাশ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীরা আগেভাগেই কড়া প্রশিক্ষণ এবং প্রস্তুতি সম্পন্ন করেন। প্যারাট্রুপারদের নিরাপদ অবতরণের জন্য নির্দিষ্ট উড্ডয়ন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় এবং আকাশে একত্রিত হওয়ার সময় প্রতিটি সদস্যের ভূমিকা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়। এর ফলে প্রদর্শনীটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় এবং বিশ্ব রেকর্ডের স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়।
পরিবেশগত এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে অনুষ্ঠানস্থলে বিভিন্ন পর্যায়ে প্রস্তুতি নেওয়া হয়। সাধারণ দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে মহড়া ও প্যারাট্রুপার প্রদর্শনী উপভোগ করেন। সামরিক বাহিনীর এই আয়োজন দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা প্রদর্শনের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণকে সামরিক দক্ষতা এবং আকাশ সম্পর্কে সচেতন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্বাধীনতার এ ৫৪তম বছরে অনুষ্ঠিত এই আকাশ প্রদর্শনী কেবল আন্তর্জাতিক রেকর্ড অর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি দেশের সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা ও প্রশিক্ষণের মান আরও উচ্চস্তরে তুলে ধরেছে। অনুষ্ঠানটি সামরিক ঐক্য ও জনগণের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্কের শক্তিশালী দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।


