নিজস্ব প্রতিবেদক
সচিবালয়ে ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া ১৪ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) একাধিক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাদের সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সূত্রে নিশ্চিত হয়েছে। বরখাস্তকৃতদের মধ্যে বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা ও কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির, সহসভাপতি শাহীন গোলাম রাব্বানী এবং সদস্য নজরুল ইসলাম রয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে বরখাস্ত করা অন্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে আছেন—স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রোমান গাজী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আবু বেলাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক কামাল হোসেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. তায়েফুল ইসলাম, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক বিপুল রানা বিপ্লব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক মো. আলিমুজ্জামান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র রায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী ইসলামুল হক ও মো. মহসিন আলী, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক ও সংযুক্ত পরিষদের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান সুমন এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক নাসিরুল হক।
এর আগে, পাঁচ দিনের রিমান্ডে তাদের আটক করা হয়েছিল। তারা ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন’ অনুযায়ী মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে পাঠানো হয়।
ঘটনার পটভূমিতে, গত ১০ ডিসেম্বর সরকারি কর্মচারীরা সচিবালয়ে উপস্থিত অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে প্রায় সাত ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ রাখেন। পরে পুলিশের সহায়তায় রাত সোয়া ৮টার দিকে তিনি বাসায় ফেরেন।翌 দিনও আন্দোলনকারীরা সচিবালয়ের প্রধান প্রবেশপথে রাস্তা অবরোধ করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী পর্যায়ক্রমে তাদের গ্রেপ্তার করে।
সরকারি সূত্র জানায়, সাময়িক বরখাস্তের প্রজ্ঞাপন কার্যকর হওয়া পর্যন্ত উক্ত কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। এটি সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক কার্যক্রমের স্বাভাবিক নিয়ম নিশ্চিত করার অংশ হিসেবে নেওয়া ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ সচিবালয়ে এমন ধরনের আন্দোলন প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটায়, যা নীতি নির্ধারণ ও সরকারি কার্যক্রম পরিচালনায় প্রভাব ফেলে। বরখাস্তকৃত কর্মকর্তাদের বিষয়ে পরবর্তী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মন্ত্রণালয় ও সংযুক্ত পরিষদ পর্যায়ক্রমে জানাবে।
এই ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে কর্মচারীদের আইনভঙ্গ ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। সমমনা কর্মসূচি বা আন্দোলন পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাতে সরকারি কাজকর্মে ব্যাঘাত না ঘটে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভবিষ্যতে কর্মচারীদের ভাতা ও অন্যান্য দাবির বিষয়ে সুসংগত নীতি গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখার পরিকল্পনা করছে।


