নিজস্ব প্রতিবেদক
নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের খুলনা জেলা শাখার সাবেক সহসভাপতি ও খুলনার সাবেক সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবুর ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) তসলিম হুসাইন তাজকে আটক করেছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টা ১৫ মিনিটে নগরীর ফরাজিপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে তসলিম হুসাইন তাজকে আটক করা হয়। আটক করার পর তাকে খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নেওয়া হয় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর গোয়েন্দা শাখার কর্মকর্তারা জানান, তসলিম হুসাইন তাজ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি, নাশকতা পরিকল্পনা এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগের বিষয়ে তদন্তের আওতায় ছিলেন। প্রাথমিকভাবে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতেই তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছিল।
খুলনা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৈমুর ইসলাম জানান, তসলিম হুসাইন তাজ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছিলেন বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। তার বিরুদ্ধে আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনায় যুক্ত থাকার অভিযোগও রয়েছে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই তাকে আটক করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
ডিবি সূত্র জানায়, তসলিম হুসাইন তাজ খুলনা মহানগর এলাকায় অবস্থান করে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করছিলেন। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরও তিনি বিভিন্নভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিলেন বলে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে। এসব কর্মকাণ্ডে তার সম্পৃক্ততার বিষয়ে বিস্তারিত যাচাই-বাছাই চলছে।
পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়েরযোগ্য অভিযোগ ও প্রাপ্ত তথ্য যাচাই করে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রয়োজনে তাকে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড আবেদন করা হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যেকোনো ধরনের সহিংসতা, নাশকতা বা আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে নিয়মিত অভিযান ও তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ আরও জানায়, আটককৃত ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্য কারও ভূমিকা আছে কি না, সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে। তদন্তে নতুন তথ্য পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা হবে।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে খুলনা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। রাজনৈতিক সহিংসতা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের আশঙ্কা থাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।


