বিশেষ প্রতিনিধি;
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাঈল হোসেন চৌধুরী সম্রাট উপাধি পেয়েছেন ক্যাসিনো সম্রাট। দীর্ঘদিন ধরে অঘোষিতভাবে এ সম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করতেন সম্রাট। তিনি কাকরাইলে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দখলদারিত্ব, অপরাধ জগত ছাড়াও ঢাকা শহরের জুয়ার আসর নিয়ন্ত্রণ করতেন। যা তাকে এনে দিয়েছে ‘ক্যাসিনো সম্রাটে’র মতো তকমা।
তবে অভিযান শুরুর পর গত কয়েকদিন ধরেই গা ঢাকা দিয়েছিলেন যুবলীগের এ নেতা। গতকাল রবিবার তাকে আটকের পর কাকরাইল এলাকায় স্বস্তি ফিরেছে। কাকরাইল এলাকার এক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, এ এলাকায় ব্যবসা করতে হলে সম্রাটকে বাধ্যতামূলক চাঁদা দিতে হতো। তার সাঙ্গপাঙ্গরাই এ চাঁদা আদায় করত।
সিনেমাপাড়ায় আতঙ্ক!
মূলত খালেদের পরামর্শ ও আগ্রহেই পরবর্তী সময়ে সিনেমার দিকে অধিক মনোযোগী হন সম্রাট। শোনা যায়, তার ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত আরমানের মাধ্যমে বেনামে সিনেমায় টাকা লগ্নি করতেন তিনি। সেই সুবাদে চলচ্চিত্রের মানুষদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অনেক নামিদামি নায়ক-পরিচালক তার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতেন সিনেমার টাকার জন্য। দু-একজন প্রথম সারির নায়িকার সঙ্গেও বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তার, এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছে বহুবার।
নানাজনের আবদার রক্ষার্থে মাঝে মধ্যে বাইকে চড়া শতাধিক কর্মী নিয়ে এফডিসিতে শোডাউন করতেন সম্রাট। কারো কোনো দরকার হলেই ছুটে যেতেন সম্রাটের দরবারে। চলচ্চিত্রের নানা বিচার-সালিশেও প্রভাব ছিল তার। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বেশকিছু শীর্ষস্থানীয় সমিতির ক্ষমতায় কে বসবে না বসবে সেগুলোও নিজের অফিসে বসে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতেন সম্রাট। চলচ্চিত্রের অনেক নেতাকর্মীকে দেখা গেছে সম্রাটের অফিসে গিয়ে ফুল দিতে। অনেকটা যেন এফডিসিরও অঘোষিত সম্রাট হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
খালেদের পর এবার সেই সম্রাট ও তার অন্যতম সহযোগী আরমান গ্রেফতার হওয়ায় আতঙ্কিত চলচ্চিত্রপাড়ার অনেকেই। সেই সঙ্গে বিপদে পড়েছেন সেই সব প্রযোজক, যারা সম্রাট-আরমানের টাকায় নিজেদের প্রযোজক হিসেবে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন।