শরিফ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরে

শরিফ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরে

জাতীয় ডেস্ক
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও সংগঠক শরিফ ওসমান হাদির প্রথম জানাজা সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত হবে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুরের একটি মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর মরদেহ বাংলাদেশে আনা হবে। পরে ঢাকায় দ্বিতীয় জানাজা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।

ইনকিলাব মঞ্চের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মরদেহ বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে। ফ্লাইটটি সন্ধ্যা ৬টা ০৫ মিনিটের দিকে ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে শনিবার বাদ জোহর ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সংগঠনের বিবৃতিতে জানানো হয়, সিঙ্গাপুরের আঙ্গুলিয়া মসজিদে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় প্রথম জানাজা সম্পন্ন হবে। জানাজায় প্রবাসী বাংলাদেশি ও স্থানীয় মুসল্লিদের অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জানাজার পর মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়, যাতে নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী ঢাকায় দ্বিতীয় জানাজা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা যায়।

শরিফ ওসমান হাদি গত সাত দিন ধরে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে ১০টার দিকে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া মাত্রই দেশে রাজনৈতিক অঙ্গন ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মধ্যে শোকের আবহ তৈরি হয়।

হাদির মৃত্যুর বিষয়টি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে নিশ্চিত করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা সংগঠক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু জাতির জন্য একটি দুঃখজনক ঘটনা। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের কথা উল্লেখ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বার্তায় হাদির মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন। পাশাপাশি উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোও সমবেদনা জানায়। তারা শোকবার্তায় নিহতের অবদান স্মরণ করেন এবং তাঁর পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ, দাবি ও কর্মসূচির ইতিহাস সংরক্ষণ এবং সংশ্লিষ্ট চেতনা ধারণের লক্ষ্যে শরিফ ওসমান হাদি ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠায় যুক্ত ছিলেন। সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তিনি সংগঠনের নীতিনির্ধারণী কার্যক্রম ও জনসংযোগ কার্যক্রমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতেন। তাঁর মৃত্যুর ফলে সংগঠনটির কার্যক্রমে একটি শূন্যতা তৈরি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

সরকারের পক্ষ থেকে আজ দোয়া মাহফিল আয়োজন এবং আগামীকাল রাষ্ট্রীয় শোক পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট সব তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শরিফ ওসমান হাদির জানাজা ও দাফনকে কেন্দ্র করে ঢাকায় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের উপস্থিতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ