শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে সাংবাদিকের প্রশ্ন: একাত্তরের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবি
রাজনীতি ডেস্ক
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য প্রেস’ বৈঠকে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সাংবাদিক তানভীর আহমেদ, যিনি ‘পলিটিকা টিভি’র এডিটর ইন-চিফ ও একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক বিশেষ প্রতিনিধি, জামায়াত আমিরকে প্রশ্ন করেন, “আপনারা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের জন্য ক্ষমা চাইবেন কি না?” এর জবাবে ডা. শফিকুর রহমান জানান, তিনি বারবারই এই বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন, এবং এ ধরনের প্রশ্নের জন্য তিনি অতিরিক্ত কোনো মন্তব্য করতে চান না।
বৈঠকে তানভীর আহমেদ জামায়াত আমিরের কাছে প্রশ্ন তোলেন, “বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান লন্ডনে এক বক্তব্যে বলেছেন, ‘একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা জাতি দেখেছে।’ আবার আপনি বিজয় দিবসে বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের উপর যে জুলুম করা হয়েছে, তার জন্য আপনারা ক্ষমা চেয়েছেন।’ তবে আপনি কোন জুলুমের কথা বলছেন?”
জবাবে ডা. শফিকুর রহমান প্রশ্ন করেন, “আপনি কোন মিডিয়ায় কাজ করেন?” তানভীর আহমেদ নিজের পরিচয় দেয়ার পর, জামায়াত আমির বলেন, “আমি মনে করি, আপনি একজন পরিণত রাজনীতিবিদ। আপনি আমার বক্তব্য শুনেননি, আপনি শুধু আমার কথার কাটপিস শুনেছেন।” এরপর তিনি সাংবাদিকদের ‘ইয়েলো জার্নালিস্ট’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “আমরা সেই সময়ের কিছু মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে কাজ করেছি যারা আমাদের বক্তব্য বিকৃত করেছেন।”
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, “আমি কখনোই ক্ষমা চাইনি। এটি ১৯৯৬ সালের একটি ঘটনা, যখন শেখ হাসিনা হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়েছিলেন। তারপর মিডিয়া এটিকে বিকৃত করে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। এর পরেও তারা আমাদের কাছে ক্ষমা চেয়েছে, তবে সেটা ছিল গোপনে। তবে তারা প্রকাশ্যে ক্ষতি করেছে।”
তানভীর আহমেদ আবারও একই প্রশ্ন করেন, “একাত্তরের ভূমিকা নিয়ে আপনারা প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন কি না?” এর জবাবে জামায়াত আমির বলেন, “আর কতবার আমার কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করবেন? আমি এখানে দাঁড়িয়ে বলেছি, শতবার বলেছি, দুই হাজার বার বললে কি খুশি হবেন?”
এ সময় সাংবাদিক তানভীর আহমেদ আবারও তার বক্তব্য পুনরায় শোনানোর অনুরোধ করলে, জামায়াত আমির পাল্টা বলেন, “দরকার নেই। আমি বারবার একই কথা বলব কেন? বহুবার বলেছি। একবার বলাতে যদি না হয়, ১০ হাজার বার বলাতেও কিছু হবে না।”
এ মন্তব্যের মাধ্যমে জামায়াত আমির তার অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন, এবং এ ধরনের প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি নিয়ে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন।


