আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জাতিসংঘ ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি দ্রুত, নিরপেক্ষ, পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বচ্ছ তদন্ত চালানোর আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি একই সঙ্গে দেশটিতে শান্তি বজায় রাখা এবং হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনার ভলকার তুর্ক শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, গত বছর গণআন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির হত্যাকাণ্ডে তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তুর্ক আরও জানান, গত সপ্তাহে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হওয়ার পর হাদি বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
বিবৃতিতে মানবাধিকার কমিশনার সবার প্রতি সহিংসতা থেকে বিরত থাকার এবং শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, প্রতিশোধ কেবল বিভেদকে আরও গভীর করবে এবং সবার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করবে। তুর্কের মতে, অন্তর্বর্তী সরকারকে হাদির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণে যথাযথ তদন্ত পরিচালনা করতে হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনজীবনে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
ঘটনার প্রেক্ষাপট অনুযায়ী, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগের সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। গুলি তার মাথায় লেগে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে তাকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
এই হত্যাকাণ্ড দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশে নতুন ধরনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সহিংসতার পুনরাবৃত্তি রোধ করা জরুরি। এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত ও স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সহিংসতা কমানো সম্ভব হবে।
জাতিসংঘের বিবৃতিতে সরকারের কাছে আরও প্রত্যাশা করা হয়েছে যে, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমস্ত তথ্য অনুসন্ধান করে দায়ীদের আইনি প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হবে এবং জনজীবনে নিরাপত্তা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা হবে। এই ধরনের পদক্ষেপ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে এবং সাধারণ নাগরিকদের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।


