জাতীয় ডেস্ক
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের ন্যায্য বিচারের আওতায় আনা প্রয়োজন। সংস্থাটি আরও উল্লেখ করেছে, এই ধরনের হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে দোষীদের দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা জরুরি, তবে মৃত্যুদণ্ড প্রয়োগের মাধ্যমে নয়।
ওসমান হাদির মৃত্যু এই ঘটনায় নতুন মাত্রা এনেছে। গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে নির্বাচনী প্রচারণার সময় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে আহত করে। গুরুতর অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়, যেখানে ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ওসমান হাদির মৃত্যু এবং এই হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষাপট রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে নির্বাচনী প্রচারণার সময়, যা দেশের রাজনৈতিক নিরাপত্তা ও ভোটপ্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের ঘটনা ভোটপর্বের সময়ে সাধারণ নাগরিক ও প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ওসমান হাদির মরদেহ দেশে আনা হয়। ইনকিলাব মঞ্চ জানিয়েছে, পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে। একই সঙ্গে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বাদ জোহর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের শনাক্ত করা হচ্ছে। তবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা এই তদন্তকে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও স্বাধীন হওয়ার প্রয়োজনীয়তা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ডের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের মধ্যে নিরাপত্তা, বিচার ও নির্বাচনী স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এ কারণে তদন্তের স্বচ্ছতা ও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা না হলে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং সামাজিক অনিশ্চয়তা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
এ ঘটনায় দেশের মানবাধিকার সংস্থা ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা নজর রাখছে এবং তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে, দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে তদন্ত প্রক্রিয়ায় কোনো প্রকার বাধা রোধ করতে হবে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের বিচারব্যবস্থা ও মানবাধিকারের মান রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।


