এনসিপি প্রার্থী আবদুল হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকির অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত আটক

এনসিপি প্রার্থী আবদুল হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকির অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত আটক

জেলা প্রতিনিধি

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় নোয়াখালী-৬ আসনের জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রার্থী আবদুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে প্রধান অভিযুক্ত ইসরাত রায়হান অমিকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে হাতিয়া উপজেলার চর ইশ্বর ইউনিয়নের নন্দ রোড এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

পুলিশ জানায়, আটক ইসরাত রায়হান অমি চর ইশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া হুমকির বার্তা ও ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে করা সাধারণ ডায়েরির (জিডি) ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে।

এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে আবদুল হান্নান মাসউদের চাচা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির হাতিয়া উপজেলা প্রধান সমন্বয়কারী হেডমাস্টার শামছল তিব্রিজ হাতিয়া থানায় একটি জিডি করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ‘Israt Raihan Ome’ এবং ‘রুপক নন্দী’ নামের দুটি ফেসবুক আইডি থেকে আবদুল হান্নান মাসউদ ও তার সহযোগীদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে।

জিডির বিবরণ অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মেসেঞ্জারে পাঠানো একটি বার্তার স্ক্রিনশট ইতোমধ্যে বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। স্ক্রিনশটে দেখা যায়, হুমকিমূলক বার্তায় বলা হয়েছে— ‘হান্নান বল আর তানভির বল যেই নেতাই হোক, উত্তরাঞ্চলে চলাচল হারাম হয়ে যাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা ডাইরেক্ট গিলে খেয়ে ফেলবে।’ এ ধরনের বক্তব্যকে সংশ্লিষ্টরা সরাসরি প্রাণনাশের হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, জিডিতে ইসরাত রায়হান অমি ছাড়াও আরও ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা হলেন— রুপক নন্দী (২৫), সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ (৪৬), প্রেম লাল (২৫), নুর হোসেন রহিম (২৬), বাবুলাল (৩২) এবং ওমর ফারুক (৩২)। জিডিতে দাবি করা হয়েছে, এসব ব্যক্তি হুমকির সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকতে পারেন।

হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন, জিডি হওয়ার পর থেকেই পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত শুরু করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশট ও সংশ্লিষ্ট তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। প্রাথমিক যাচাইয়ে হুমকির সঙ্গে অভিযুক্ত ইসরাত রায়হান অমির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যাওয়ায় তাকে আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিডিতে নাম থাকা অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় ডিজিটাল আলামত সংগ্রহ ও যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হাতিয়া উপজেলায় রাজনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকির অভিযোগ ওঠায় এলাকায় উদ্বেগ ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক সহিংসতা বা হুমকির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে অবনতি না ঘটে, সে জন্য দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন।

পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানিমূলক বক্তব্য বা হুমকি প্রদানের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ