তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র উত্তোলন বগুড়া-৬ আসনে

তারেক রহমানের মনোনয়নপত্র উত্তোলন বগুড়া-৬ আসনে

নিজস্ব প্রতিবেদক

তারেক রহমানের সম্ভাব্য স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে কুমিল্লার রাজনীতিক শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনের মনোহরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে বিএনপির আয়োজিত এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে আবিদুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই মাসের রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শরীফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনাকে তিনি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের অংশ হিসেবে দেখছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে সামনে রেখে রাষ্ট্রে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ওই হামলা সংঘটিত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে একটি অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানের দেশে ফেরাকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা ও তৎপরতা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কোনো ধরনের বাধা সৃষ্টি করা সম্ভব নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার দাবি অনুযায়ী, রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় বিভিন্ন পক্ষের পক্ষ থেকে এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তবে এতে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না।

অনুষ্ঠানে আবিদুল ইসলাম খান শরীফ ওসমান হাদিকে জুলাই মাসের আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সংগঠক হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে কিছু গোষ্ঠী সক্রিয় হয়েছে। তার অভিযোগ অনুযায়ী, এই ঘটনাকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে সহিংস কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।

তিনি রাজশাহী ও খুলনায় কূটনৈতিক কার্যালয়ে হামলা এবং ময়মনসিংহে সংঘটিত একটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন। এসব ঘটনাকে তিনি পরিকল্পিতভাবে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির প্রচেষ্টা হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এসব সহিংস ঘটনার লক্ষ্য হচ্ছে দেশে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করা।

বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, কিছু রাজনৈতিক শক্তি নির্বাচন চায় না এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ভোগ করেছে। পরবর্তীতে তারা ভিন্ন পরিচয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। এসব অভিযোগের মাধ্যমে তিনি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে একটি বিভাজনের চিত্র তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার ভূইয়া দোলন। এতে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি শাহা সুলতান খোকন ও এস এম মুনসুর, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক রহমত উল্লাহ জিকু, যুগ্ম আহ্বায়ক বাহারুল আলম বাবর, সদস্য সচিব আমান উল্লাহ চৌধুরী, উপজেলা যুবদলের নেতা মোজাম্মেল হক, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু এবং উপজেলা ছাত্রদল সদস্য সচিব নূর মোহাম্মদ মেহেদীসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, দলীয় কর্মসূচি এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা দলীয় ঐক্য বজায় রাখার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি রোধে সচেতন থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একই সঙ্গে তারা রাজনৈতিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, শরীফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা ও পরবর্তী রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বিস্তারিত বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ