নির্বাচনকে ঘিরে দেশে যৌথ অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

নির্বাচনকে ঘিরে দেশে যৌথ অভিযান শুরুর সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের

জাতীয় ডেস্ক

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং আসন্ন নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে খুব শিগগিরই আইনশৃঙ্ঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী, সহিংস বা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড বরদাশত করা হবে না এবং এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের অবস্থান এ বিষয়ে স্পষ্ট এবং দ্ব্যর্থহীন। কেউ যদি নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করে বা জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের মূল্যায়ন অনুযায়ী, সার্বিকভাবে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে কমিশনের কাছে এমন তথ্য রয়েছে যে, একটি মহল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বা পরিবেশ অস্থিতিশীল করতে বিভিন্ন ধরনের তৎপরতায় জড়ানোর চেষ্টা করছে। এসব কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সানাউল্লাহ বলেন, সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড কিংবা পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে যারা পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করবে, তাদের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের শিথিলতা দেখানো হবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হবে, যাতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য হলো শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, কিছু ব্যক্তি আবেগ বা বিভ্রান্তিকর তথ্যকে কাজে লাগিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আইনের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে এবং আইন অনুযায়ী তাদের পরিণতি ভোগ করতে হবে। নির্বাচন কমিশন মনে করে, আইনের যথাযথ প্রয়োগই নির্বাচনকালীন স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রধান উপায়।

বৈঠকে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা পরিকল্পনা, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিতকরণ এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত করতে পারে—এমন যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে পরিস্থিতি অনুযায়ী তাৎক্ষণিক অভিযান পরিচালনার প্রস্তুতিও রাখতে বলা হয়েছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জনগণের জানমাল রক্ষা, ভোটারদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াত এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই যৌথ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। নির্বাচন কমিশনের মতে, এ ধরনের সমন্বিত উদ্যোগের ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং নির্বাচনী পরিবেশ আরও স্থিতিশীল হবে।

নির্বাচন কমিশন মনে করছে, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যৌথ অভিযানের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে নজরদারি বাড়ানো হলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনায় ভবিষ্যতেও প্রয়োজন অনুযায়ী এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখা হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ