জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে অসদুপায় অবলম্বনের ঘটনা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ভর্তি পরীক্ষায় চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে অসদুপায় অবলম্বনের ঘটনা

শিক্ষা ডেস্ক

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষ (সম্মান) ‘বি’ ইউনিটের (সমাজ বিজ্ঞান অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষার সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (চ্যাটজিপিটি) ব্যবহার করে উত্তর বের করার চেষ্টা করার অভিযোগে এক শিক্ষার্থী আটক হয়েছে। এই ঘটনা ঘটেছে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের দুই নম্বর কক্ষে দ্বিতীয় সিফটের পরীক্ষা চলাকালীন।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আটককৃত শিক্ষার্থীর নাম সাদিয়া আমির মাহি, তিনি কক্সবাজার জেলার চকরিয়ার আমির হোসেন জুয়েলের কন্যা। তাকে হাতেনাতে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক শিক্ষার্থী স্বীকার করেছেন, তিনি Huawei 9Y Prime মডেলের মোবাইল ফোন পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে উত্তর তৈরি করেছিলেন। পরে কেন্দ্রের পরিদর্শক তাকে দেখে এবং প্রক্টরিয়াল বোডির নিকট হস্তান্তর করেন।

সাদিয়া আমির মাহি স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছেন, “আমি স্বেচ্ছায়, স্বজ্ঞানে ও অন্যের প্ররোচনা ছাড়াই ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করেছি। আমার দ্বারা সংঘটিত এই কর্মকাণ্ডে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে ধরণের শাস্তি প্রদান করবেন তা আমি মেনে নেব।”

হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষক জানান, পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীকে প্রথমে পেছনের সিট থেকে সামনের সিটে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু সামনের সিটেও তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করে চ্যাটজিপিটি দিয়ে উত্তর তৈরি করার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে তাকে হাতেনাতে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশেদুল আলম বলেন, “সংশ্লিষ্ট অনুষদের ইউনিট প্রধানকে জানানো হয়েছে যাতে শিক্ষার্থীর পরীক্ষা বাতিল করা হয় এবং ভবিষ্যতে তিনি আর কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পরীক্ষা দিতে না পারেন।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এই পদক্ষেপ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রযুক্তি ব্যবহার করে অসদুপায়ের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভর্তি পরীক্ষার সময় চ্যাটজিপিটি বা অনলাইন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার প্রতিরোধে প্রশাসন সতর্কতা জোরদার করেছে এবং কেন্দ্রের পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও কড়া করার পরিকল্পনা করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনা ভর্তি পরীক্ষার স্বচ্ছতা এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়েছে। সাদিয়া আমির মাহি আটক হওয়ার ঘটনা ভর্তি পরীক্ষার নিয়মকানুন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

চলতি বছর জাবিতে ভর্তি পরীক্ষায় প্রার্থীদের মধ্যে অনিয়ম ও অসদুপায় প্রতিরোধে প্রশাসন পূর্বেও একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ ধরনের ঘটনা পুনরায় এড়াতে ভবিষ্যতে পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হচ্ছে।

শিক্ষা শীর্ষ সংবাদ