অর্থনীতি ডেস্ক
অন্তর্বর্তী সরকার আগামী নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে করদাতাদের সুবিধার্থে দ্বিতীয় দফায় অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় একমাস বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিকল্পনা করছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে জানা গেছে, এই সময় বৃদ্ধি অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ হিসেবেও নেওয়া হতে পারে।
বর্তমানে অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের সময় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। আয়কর আইনের নিয়ম অনুযায়ী, সাধারণত রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। তবে করদাতাদের সুবিধার্থে এবং অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করার পর তাদের প্রস্তুতির জন্য সময় বাড়ানোর বিষয়ে এনবিআরের অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ঊর্ধ্বতন এনবিআর কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নির্বাচন সামনে থাকায় করদাতাদের আরেকটি সুযোগ দিতে রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে। তিনি বলেন, “অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক হওয়ায় করদাতাদের প্রস্তুতির জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া প্রয়োজন হতে পারে।”
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান রোববার (২১ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের বলেন, “সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা সম্ভব নয়। এটি একটি রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত, এবং যেহেতু এবারই প্রথমবার অনলাইনে রিটার্ন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে বিষয়টি যাচাই করা প্রয়োজন।”
চলতি অর্থবছর ২০২৫-২৬ সালে ইতোমধ্যে ২৬ লাখের বেশি করদাতা তাদের ই-রিটার্ন অনলাইনে জমা দিয়েছেন। গত আগস্ট মাসে এনবিআর সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করেছে। এই নতুন নিয়মের ফলে করদাতাদের করদায়িত্ব আরও স্বচ্ছ ও দ্রুতভাবে সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধি করলে করদাতারা সময়মতো তাদের আয়কর তথ্য সম্পূর্ণ করতে পারবে এবং তা জাতীয় রাজস্ব সংগ্রহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি, অনলাইন পদ্ধতি কর প্রক্রিয়াকে আরও স্বয়ংক্রিয় ও সহজ করবে, যা প্রশাসনিক ব্যয় কমাতে সাহায্য করবে।
এনবিআরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, সময়সীমা বাড়ানো হলে করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন পূরণের নির্দেশিকা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা আরও জোরদার করা হবে। এতে করদাতাদের প্রস্তুতি ও সময়োপযোগী দাখিল নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
বর্তমানে দেশের কর প্রশাসন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে রিটার্ন প্রক্রিয়াকে দ্রুত, স্বচ্ছ ও সময়োপযোগী করার জন্য নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। অনলাইনে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা এই প্রচেষ্টার একটি অংশ। রিটার্ন দাখিলের সময় বৃদ্ধির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই করদাতাদের নির্ধারিত সময়সীমা অনুসারে তাদের কর তথ্য জমা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
এই উদ্যোগের ফলে আশা করা হচ্ছে, করদাতাদের জন্য প্রক্রিয়াটি আরও সহজ হবে এবং সরকারের কর সংগ্রহের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। এছাড়া, নির্বাচনের আগে করদাতাদের উপর অতিরিক্ত চাপ কমানোর মাধ্যমে আয়কর ব্যবস্থাকে আরও করদাতানুকূল করা সম্ভব হবে।


