শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’ : তারেক রহমান

শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’ : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে সুপরিকল্পিত রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিংয়ের ঐতিহাসিক বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “মার্টিন লুথার কিং বলেছিলেন—আই হ্যাভ এ ড্রিম। সেই ধারাবাহিকতায় আমি বলছি—আই হ্যাভ এ প্ল্যান।” এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল, নেতাকর্মী এবং দেশবাসীকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

রোববার রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। অনুষ্ঠানে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের পাশাপাশি বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। বক্তৃতাকালে তারেক রহমান দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতা, ভবিষ্যৎ করণীয় এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দিকনির্দেশনা নিয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।

তারেক রহমান বলেন, দেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রত্যাশা করছে। জনগণের সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহনশীলতা এবং দায়িত্বশীল আচরণ প্রয়োজন। তিনি দাবি করেন, বিএনপি সব সময় জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে আন্দোলন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

গণসংবর্ধনার মঞ্চে উপস্থিত সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন শুধু একটি দলের নয়; এটি দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তির সম্মিলিত আকাঙ্ক্ষা। এ লক্ষ্যে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও ন্যূনতম জাতীয় ইস্যুতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

তারেক রহমান আরও বলেন, শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমেই কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আনা সম্ভব। সহিংসতা বা বিশৃঙ্খলা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তার মতে, জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ইতিবাচক সংস্কার সম্ভব।

অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী ও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ বজায় রেখে তাদের সমস্যা ও প্রত্যাশা রাজনীতির কেন্দ্রে রাখার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, জনগণের আস্থা অর্জনই একটি রাজনৈতিক দলের সবচেয়ে বড় শক্তি।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তারেক রহমানের এই বক্তব্য বিএনপির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কৌশল ও দিকনির্দেশনার একটি ইঙ্গিত বহন করে। বিশেষ করে ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি দল ও সমমনা শক্তিগুলোকে একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য সামনে রেখে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়েছেন।

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতি ভবিষ্যতে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমন্বয়ের সম্ভাবনার দিকেও ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এই বক্তব্য ও আহ্বান কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হবে, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং মাঠপর্যায়ের কর্মসূচির ওপর।

অনুষ্ঠান শেষে নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তারেক রহমান। আয়োজকেরা জানান, এই গণসংবর্ধনার মূল উদ্দেশ্য ছিল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জোরদার করা এবং ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক পথচলার বিষয়ে নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করা।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ