জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বৃহস্পতিবার মন্তব্য করেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। তিনি এই মন্তব্য তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, প্রায় দেড় যুগের নির্বাসনের পর তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বা সাংগঠনিক অর্জনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং বাংলাদেশের ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক সংগ্রামের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে তা মূল্যায়ন করা উচিত। তিনি বলেন, “জনাব তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রমাণ করে একজন বাংলাদেশি নাগরিক ও রাজনৈতিক নেতার নিজ ভূমিতে ফেরার অধিকারকে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের মাধ্যমে ঠেকানো যায় না। স্বৈরাচার যত শক্তিশালীই হোক, জনগণের রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তিকে চিরতরে দমিয়ে রাখতে পারে না।”
ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক ভিন্নমতের কারণে তারেক রহমান ও তার পরিবার যে রাষ্ট্রীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং দীর্ঘ নির্বাসনে বাধ্য হয়েছেন, তা গত দুই দশকের কর্তৃত্ববাদী শাসনের একটি প্রমাণ। তবে, এই প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে শহীদ ও আহতদের ত্যাগ এবং গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৈরি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে। হাসনাত বলেন, “এই বাস্তবতা ক্ষমতার নয়, বরং জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত লড়াইয়ে প্রাপ্ত বাস্তবতা।”
অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ভিন্নমত কোনো অপরাধ নয়, বরং অধিকার, যেখানে রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে কাউকে রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হতে হবে না, বরং রাষ্ট্রই তার সুরক্ষা নিশ্চিত করবে। নতুন বাংলাদেশে গণতন্ত্র শুধু নির্বাচনের বেড়াজালে আবদ্ধ থাকবে না, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সংগঠিত হওয়ার অধিকার এবং রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার ন্যায্য পরিবেশ নিশ্চিত করবে।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ আরও উল্লেখ করেন, গত দুই দশকের রাজনৈতিক অবরুদ্ধতা ভেঙে মুক্ত বাংলাদেশের পথে যাত্রা শুরু হয়েছে। এই যাত্রায় আইনের শাসন ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা প্রধান চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, “এই লড়াই যেন কোনো ব্যক্তি বা দলের মাঝে সীমাবদ্ধ না থাকে এবং জনগণের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা হয়; তা নিশ্চিত করাই প্রত্যেক রাজনীতিবিদের দায়িত্ব।”
তিনি শেষ মন্তব্যে বলেন, “জনাব তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্রকে আরো শক্তিশালী করবে। তবে নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সহাবস্থান, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সুস্থ রাজনৈতিক প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। স্বদেশে প্রত্যাবর্তনকারী তারেক রহমানকে স্বাগত জানাই। বেগম জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অসম্পূর্ণ লড়াই পূর্ণ করার দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামে তারেক রহমানের অংশগ্রহণ জনগণের প্রত্যাশা ও ইতিহাসের দায় পূরণে ভূমিকা রাখবে।”


