রাজধানীসহ সারাদেশে যখন ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহ বিস্তার দেখা দেয়, তখন মশা নিধনে নড়েচড়ে বসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন; কিন্তু রাজধানীতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমতে না কমতেই দুই সিটির মশা নিধন কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে ধীরগতি।
রাজধানীতে বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে ইতিমধ্যে ফের তৈরি হয়েছে ডেঙ্গু মশার আবাসস্থল; কিন্তু বর্তমানে দুই সিটির মশা নিধন কর্মসূচি নেই বললেই চলে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কিছু ওয়ার্ডে মশা নিধনে স্প্রে করলেও উত্তর সিটির মশা নিধন কার্যক্রমে একদমই ভাটা পড়েছে। যদিও এ বছর দুই সিটিতেই মশা নিধনে বাজেট কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে; কিন্তু কিছুদিন তত্পরতার পর তা একেবারেই থেমে গেছে বলা যায়।
এবছর এডিস মশার কারণে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণে ৪৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে। গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ ছিল মাত্র ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। অর্থাত্ গত অর্থবছরের চেয়ে এবারে ৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এবারের বাজেটে মশা নিয়ন্ত্রণ খাতে ৪৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখেছে। বাজেট ঘোষণার পর রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় দুই সিটির চিরুনি অভিযান ছিল চোখে পড়ার মতো।
তথ্য মতে, গত ২০ আগস্টের পর ডিএনসিসি এলাকায় দুই দফা ‘চিরুনি’ অভিযান নাম দিয়ে এডিস মশার লার্ভা নিধনে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ডিএসসিসিও তার প্রতিটি ওয়ার্ডে এডিসের লার্ভা নিধন অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। এতে জেল-জরিমানাসহ বিভিন্ন বাড়ির মালিকদের সতর্ক করা হয়। ঐ অভিযানে ৩৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। ডিএসসিসির সেই অভিযান এখনো চলছে, তবে ধীর গতিতে।
অন্যদিকে, ডেঙ্গুর আবাসস্থল বেশি থাকায় তখনকার অভিযানে দক্ষিণ সিটির চেয়ে উত্তর সিটিতেই কার্যক্রম ছিল চোখে পড়ার মতো। এখন ধীরে ধীরে সেই তত্পরতা শূন্যের কোঠায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল হাই বলেন, আমাদের আওতাধীন এলাকায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কার্যক্রম থেমে নেই। আগামী সপ্তাহ থেকে আবারও জোরালোভাবে অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সেল কাজ করবে। মন্ত্রণালয় থেকে এখনো জনবল পাঠানো হচ্ছে। প্রয়োজন হলে মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে এই কর্মসূচি আরো বাড়ানো হবে। আমাদের অভিযানের ধারাবাহিকতা থাকবে।