আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শনিবার বলেছেন, কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রমাণ করে যে রাশিয়া যুদ্ধ শেষ করতে চায় না এবং প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইউক্রেনকে আরও বেশি কষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করছে। ওইদিনই যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে রওনা হন তিনি।
শনিবার কিয়েভে ও এর আশপাশের এলাকায় রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন নিহত হয়েছেন এবং দুই ডজনের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। এই হামলার ফলে শহরের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, যার ফলে প্রচণ্ড শীতে লাখ লাখ মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। কিয়েভ অঞ্চলের গভর্নর মিকোলা কালাশনিক জানান, হামলায় ৪৭ বছর বয়সী এক নারী নিহত হয়েছেন এবং ১৯ জন আহত হয়েছেন।
কিয়েভের মেয়র ভিতালি ক্লিচকো জানিয়েছেন, শহরের ২ হাজার ৬০০টি আবাসিক ভবন ও শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কমিউনিটি ভবনে তাপ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে কিয়েভের বাম তীরের কিছু অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে এবং প্রায় ৩ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছেন।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, সকালবেলা রাশিয়ার হামলার পর দেশব্যাপী বিমান হামলার সতর্কতা জারি করা হয়, যেখানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র বিভিন্ন অঞ্চলের দিকে এগিয়ে আসছিল। জেলেনস্কি বলেছেন, এই হামলা কিয়েভে যুদ্ধের অবসান না চাওয়ার রাশিয়ার মানসিকতা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত করেছে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করার পর থেকে এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। বর্তমানে যুদ্ধের অবসান ও শান্তি আলোচনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। বৈঠকটি ফ্লোরিডায় অনুষ্ঠিত হবে এবং এতে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত ২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।
এদিকে, রাশিয়া অভিযোগ করেছে যে, জেলেনস্কি ও তার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থকরা এই শান্তি পরিকল্পনা ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছেন, যার মাধ্যমে সংঘাত স্থগিত রেখে পূর্বাঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের সুযোগ পাবে ইউক্রেন।
এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের জনগণ আশঙ্কা করছে যে, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে আগ্রহী নয়, এবং যুদ্ধের অবসান না হওয়ার কারণে আরও মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে পারে।


