জেলা প্রতিনিধি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় শুক্রবার সকালে একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণে নারী, শিশুসহ ৪ জন আহত হয়েছেন। মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল উড়ে যায় এবং ভবনের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য এবং বোমা তৈরির সরঞ্জাম পাওয়া গেছে বলে পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনে বিস্ফোরণের শব্দ শুনে স্থানীয়রা দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। প্রত্যক্ষদর্শী এক বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণে মাদ্রাসার দুটি কক্ষের দেয়াল সম্পূর্ণ ধসে পড়ে এবং ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়। পাশের আরও দুটি কক্ষে ফাটল ধরেছে।
হাসনাবাদ এলাকার ওই বাসিন্দা আরও জানান, “এটি সত্যিই ভীতিকর ছিল। বিস্ফোরণের সময় মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিল না, কারণ এটি শুক্রবার ছুটির দিন ছিল।” মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন, তার স্ত্রী আছিয়া বেগম এবং তাদের দুই সন্তান উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭) আহত হন। তাদের মধ্যে আছিয়া এবং তার দুই সন্তানকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনার পর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে এবং ঘটনাটির পূর্ণ তদন্ত চলছে। তিনি আরও বলেন, “ককটেল, দাহ্য পদার্থ ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং ক্রাইম সিন দলও তদন্ত শুরু করেছে।”
মাদ্রাসার পরিচালনা বিষয়ক তথ্য জানিয়ে ভবন মালিক পারভীন বেগম বলেন, “তিন বছর ধরে মুফতি হারুন মাদ্রাসা পরিচালনা করতেন, কিন্তু তিনি কেবল মাঝে মাঝে আসতেন।” তিনি বলেন, “আজ পুলিশ যখন ভবনের ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে, তখন আমি চমকে গেছি।”
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে পাশের ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। মাদ্রাসার ওই কক্ষে বর্তমানে কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। ভবনের এক পাশে তিনটি কক্ষে মাদ্রাসার কার্যক্রম চলত, অপর পাশের একটি কক্ষে পরিচালক তার পরিবারসহ বসবাস করছিলেন।
পুলিশ এখনো বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করছে। একই সঙ্গে এটি কোন উদ্দেশ্যে করা হয়েছিল, সেই বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।


