ঢাবি প্রতিনিধি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হামলায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের জামিন দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক এবি যুবায়ের। তিনি দাবি করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগ নেতাদের জামিন প্রদান করছে, কিন্তু এ বিষয়ে ছাত্রনেতারা যথাযথভাবে জানতেও পারছেন না, কারণ তারা এখন জাতীয় নির্বাচন এবং রাজনৈতিক জোট নিয়ে ব্যস্ত।
এবি যুবায়ের রবিবার (২৮ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে এই উদ্বেগ জানান। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, “আমার বড় ভাইয়েরা সব ভোট আর জোট নিয়ে ব্যস্ত। হয়তো জানেও না, ১৫ই জুলাই ঢাবিতে হামলা করা ছাত্রলীগ নেতাদের জামিন দিচ্ছে ইন্টেরিম!”
যুবায়ের আরও উল্লেখ করেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের জামিন দেওয়ার বিষয়টি গভীর হতাশার সৃষ্টি করেছে। তিনি বলেন, “একদিকে খুনিদের জামিন দেওয়া হচ্ছে, আর অন্যদিকে বিপ্লবীদের খুন হওয়ার পর সিমপ্যাথি দেখানো হচ্ছে। এই হচ্ছে ইন্টেরিমের অবস্থা, শেইম অন ইউ!”
এছাড়া, আরও একটি ফেসবুক পোস্টে এবি যুবায়ের ছাত্রলীগ নেতা সুমন খলিফার জামিন প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। তিনি জানান, সুমন খলিফা, যিনি জসিমউদদীন হলের সভাপতি ছিলেন, তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, ১৫ জুলাই ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলায় তার ভূমিকা ছিল অপরিসীম। ওইদিন সুমন খলিফার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এবং আহতদের হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পুনরায় মারধর করে।
এবি যুবায়ের আরো বলেন, “এই সুমন খলিফাকে জামিন দিয়েছে ইন্টেরিম।” তিনি দাবি করেন, সুমন খলিফা জামিন পাওয়ার পরেও ছাত্রলীগের মিছিল ও মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করে, এবং হামলার ঘটনায় তার জড়িত থাকার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া সত্ত্বেও তাকে জামিন দেওয়া হয়।
এবি যুবায়ের এই অবস্থার বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি নিশ্চিত যে আমি এখন আসিফ নজরুলকে ফোন করে জানতে চাইবো, এটা কিভাবে সম্ভব? তিনি হয়তো বলবেন, ‘আমি জানি না, আমি কিছু করতে পারি না’।”
এবি যুবায়েরের এই অভিযোগ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার দেয়া মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। ঢাবির ছাত্রসংগঠন এবং ছাত্রলীগের নেতারা বিষয়টি নিয়ে এখনো কোন মন্তব্য করেননি। তবে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ঘটনার প্রতি ব্যাপক আলোচনা এবং সমালোচনা চলছেই।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আরো তোলপাড় সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং জামিনের বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছে।


