জাতীয় ডেস্ক
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
মৃত্যুকালে বেগম খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তার জ্যেষ্ঠ ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান, ছোট ছেলের স্ত্রী শামিলা রহমান সিঁথি, ছোট ভাই শামীম এসকান্দার, ছোট ভাইয়ের স্ত্রী, বড় বোন সেলিনা ইসলামসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং মরহুমার চিকিৎসায় নিযুক্ত মেডিকেল বোর্ডের সকল সদস্য।
বিএনপি মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজে মৃত্যুর তথ্য জানানো হয়েছে। প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার সময়সূচি পরবর্তীতে ঘোষণা করা হবে।
এর আগে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাত ২টার পর, এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া “অত্যন্ত সংকটময় সময় অতিক্রম করছেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, সকালবেলায় মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসা পর্যালোচনা করেছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে বেগম খালেদা জিয়া হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় তাকে দ্রুত এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছিল। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন ও দলনেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তিনি ১৯৮২ সালে বিএনপিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৪ সালের ১০ মে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে বিএনপি কয়েক দশক দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। প্রয়াণের এই মুহূর্ত বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি শূন্যতার সময় হিসেবে বিবেচিত হবে।


