জাতীয় ডেস্ক
আজ (বুধবার) সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারম্যান বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য আজ সারা দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিন দিন রাষ্ট্রীয় শোক পালন করারও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সরকার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, জানাজার প্রস্তুতি সম্পন্ন রয়েছে এবং সর্বস্তরের মানুষ যাতে নির্বিঘ্নে সম্মান জানাতে পারেন, সেই অনুযায়ী সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে। বেলা ২টায় বাদ জোহর জানাজা হবে। জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতর ও বাইরের মাঠসহ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউজুড়ে জানাজা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
জানাজার পর বেলা সাড়ে ৩টার সময় খালেদা জিয়ার মরদেহ শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যান সংলগ্ন স্থানে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধির পাশেই রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে। এতে খালেদা জিয়ার পরিবার সদস্য, সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও বিদেশি অতিথিরা অংশগ্রহণ করবেন।
দাফন কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য জিয়া উদ্যানে সাধারণ জনতার প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত রাখা হবে এবং নির্ধারিত ব্যক্তিরা ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তিকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, তার মরদেহ এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে একটি নির্ধারিত রুট ধরে নিয়ে আসা হবে। পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ রুটে এভারকেয়ার হাসপাতালে থেকে ৩৬ নম্বর এক্সপ্রেসওয়ে, কুড়িল ফ্লাইওভার, নৌ সদর দপ্তর, গুলশান-২, ফিরোজা এলাকা দিয়ে অনাগত পথ ধরে কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ হয়ে এয়ারপোর্ট রোডে উঠানো হবে। এরপর মহাখালী ফ্লাইওভার পার হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের ৬ নম্বর গেট দিয়ে পৌঁছানো হবে।
ডিএমপি একটি গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে আজ (৩১ ডিসেম্বর) থেকে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক পালন করা হবে। এই সময় ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে কিছু বিশেষ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। এতে সকল ধরনের আতশবাজি, পটকা, ফানুস ও গ্যাস বেলুন উড়ানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া উন্মুক্ত স্থানে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ডিজে পার্টি, র্যালি বা শোভাযাত্রা আয়োজনও করা যাবে না। উচ্চ শব্দে গাড়ির হর্ন বাজানো বা জন–উপদ্রব সৃষ্টি করা যেতে পারে এমন কর্মকাণ্ডও নিষিদ্ধ রাখা হয়েছে।
যাহোক, জানাজায় অংশ নিতে সুবিধার্থে ঢাকা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ট্রেন সার্ভিস পরিচালনা করবে। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) জানায়, আজ বিশেষভাবে অতিরিক্ত মেট্রো ট্রেন পরিচালিত হবে, যাতে মানুষের চলাচলে কোনো সমস্যা না হয়।
জানাজা নামাজটি পড়াবেন জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার থেকে রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় বিভিন্ন জেলা থেকে নেতাকর্মীরা ভিড় করতে শুরু করেছে। খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা ঢাকায় আসার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছেন। সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, অনেকেই বাস, ট্রেন, লঞ্চ ও ব্যক্তিগত পরিবহন ব্যবহার করে রাজধানীর পথে রয়েছেন। বিশেষত ভোলা, বরিশাল, চাঁদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে নদীপথে নেতাকর্মীরা ঢাকায় পৌঁছাতে দেখা গেছে।জানাজার সময় ও দাফন কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য ২৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, এভারকেয়ার হাসপাতাল, জাতীয় সংসদ ভবন ও জিয়া উদ্যান এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এদিকে, বিএনপি মহাসচিব শোকের দিনে নেতাকর্মীদের বিশৃঙ্খলা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।