জেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-১১ (চেদ্দৗগ্রাম) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ২৮ ডিসেম্বর কুমিল্লা জেলা রিটার্নিং অফিসার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি তার সম্পদ ও আইনি তথ্য প্রকাশ করেছেন।
হলফনামা অনুযায়ী, সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ এবং বার্ষিক আয় মিলিয়ে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। তার নিজের নামে ১০ শতক কৃষি জমি এবং ১৫ শতক অকৃষি জমি রয়েছে, যার অর্জনকালীন মূল্য ২২ লাখ ১৬ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ০.৮ একর ১৫ কাঠা জমি এবং তিনটি বাড়ি, যার মোট মূল্য ৩ কোটি ২২ লাখ ৫৩ হাজার ৭০০ টাকা।
ব্যাংক হিসাবের তথ্য অনুযায়ী, স্ত্রীর নামে প্রায় ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ টাকা নগদ রয়েছে। এছাড়া এক্সিম ব্যাংকের গুলশান শাখায় ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৭ টাকা এবং সিটি ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ৩ হাজার ৪৮৫ টাকা রয়েছে। সঞ্চয়পত্রে রয়েছে ৪ লাখ ১ হাজার ৫৯৬ টাকা। মোট অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। নিজের হাতে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের নগদ আছে ৫১ লাখ ৮ হাজার ২২৪ টাকা এবং স্ত্রীর হাতে নগদ ২১ লাখ ৯২ হাজার ৯৬৮ টাকা।
মেডিকেল শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি কুমিল্লা সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চেয়ারম্যান। তার নেতৃত্বে মেডিকেল কলেজের নামে কুমিল্লা এক্সিম ব্যাংক থেকে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৭৪ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছে। স্ত্রীর নামে ইসলামী ব্যাংকে ৯ লাখ ৪ হাজার ১০৭ টাকা, আল আরাফা ব্যাংকে ১ লাখ ৪৪ হাজার ২৬৯ টাকা এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ২৭ লাখ ২ হাজার ৩৪৭ টাকা ঋণ রয়েছে।
আইনি তথ্য অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে মোট ৩৫টি মামলা হয়েছে। তবে এসব মামলার অধিকাংশই আদালতের আদেশে স্থগিত, প্রত্যাহার বা চূড়ান্ত প্রতিবেদন (এফআরটি) গ্রহণের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে এই মামলাগুলি তার সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনগত বাধা নয়।
কুমিল্লা-১১ আসনের ভোটাররা মনে করছেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক এই নির্বাচনে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের জয়ের সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি। তার রাজনৈতিক প্রভাব, সম্পদের পরিমাণ এবং এলাকার সঙ্গে দীর্ঘদিনের সংযোগকে ভোটাররা তার জনপ্রিয়তার মূল কারণ হিসেবে দেখছেন।
হলফনামায় প্রকাশিত তথ্যের মাধ্যমে স্বচ্ছতা বজায় রেখে প্রার্থীতার যোগ্যতা প্রদর্শন করায় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আইনগত অস্বচ্ছতা কমানো হয়েছে। এই তথ্য সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এভাবে সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সম্পদ ও আইনি অবস্থা, ব্যাংক ঋণ এবং নির্বাচনী সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জনগণ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এসেছে। কুমিল্লা-১১ আসনের ভোটের ফলাফল রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


