আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে শতভাগ একমত নন উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেছেন যে আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত এ বিষয়ে একটি ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারবে।
গত সোমবার ফ্লোরিডার মার-আ-লাগো প্রাসাদে ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় পর্যায়ে উত্তরণ এবং এ সংক্রান্ত বিভিন্ন নীতিগত ইস্যু।
বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “বৈঠকের দীর্ঘ সময়জুড়ে আমরা পশ্চিম তীর নিয়ে আলোচনা করেছি। এ ইস্যুতে বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে এবং আমি এটা বলব না যে যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিম তীর ইস্যুতে ইসরায়েলের সঙ্গে শতভাগ একমত। কিন্তু আমার মনে হয় শেষ পর্যন্ত একটা ঐকমত্যে আমরা পৌঁছাতে পারব। যথাসময়ে আমরা এ ব্যাপারে ঘোষণা দেবো, তবে নেতানিয়াহুকে অবশ্যই সঠিক কাজটি করতে হবে এবং তিনি তা করবেন।”
ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর এবং গাজা উপত্যকার বর্তমান পরিস্থিতি গত কয়েক বছর ধরে উত্তেজনাপূর্ণ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলের ভূখণ্ডে আকস্মিক হামলা চালানোর পর ৮ অক্টোবর থেকে গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। দুই বছরের এই অভিযান শেষ হয় ২০২৫ সালের ১০ অক্টোবর, যখন ট্রাম্প প্রশাসনের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হয়।
গাজা অভিযানের পাশাপাশি, পশ্চিম তীরে বসবাসরত ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি পুলিশ ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ফিলিস্তিনের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পশ্চিম তীরে সেটলার ও পুলিশের সহিংসতায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১ হাজার ১০৩ জন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১১ হাজার। এছাড়া, প্রায় ২১ হাজার ফিলিস্তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন।
বৈঠক ও তৎপরতার পেছনে মূল প্রেক্ষাপট হলো পশ্চিম তীর ও গাজার নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ট্রাম্প-নেতানিয়াহু বৈঠক ঐক্যমতের সম্ভাবনা ও ফিলিস্তিন-ইসরায়েল বিরোধ সমাধানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। তবে পশ্চিম তীরের বাস্তব পরিস্থিতি এবং স্থানীয় ফিলিস্তিনি জনগণের উপর চলমান সহিংসতা সমাধানের জন্য যৌথ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
সর্বশেষ, ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ ও বৈঠক আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে বিশেষ মনোযোগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের মধ্যে পশ্চিম তীর ইস্যুতে সম্ভাব্য ঐকমত্য ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।


