জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাসভবনে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পিকার আয়াজ সাদিক এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভি এই সাক্ষাৎকারকে ‘বড় ব্রেকথ্রু’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশে প্রয়াত হয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার জানাজার নামাজ আজ বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে লাখ লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি শোক প্রকাশে উপস্থিত ছিলেন, এর মধ্যে পাকিস্তানের স্পিকার আয়াজ সাদিক এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও ছিলেন। তারা খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে শোক প্রকাশের পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গে বৈঠক করেন।
চলতি বছরের মে মাসে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চারদিনব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এ ধরনের সরাসরি বৈঠক প্রথম। ওই সংঘর্ষে উভয় দেশ থেকে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটে এবং দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। পাকিস্তানি সাংবাদিক আনাস মল্লিক জানিয়েছে, ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পিকারের কাছে যান এবং সেখানে তাদের মধ্যে সরাসরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
এ প্রসঙ্গে স্মরণযোগ্য, গত এপ্রিলে ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। হামলার পেছনে পাকিস্তানের যুক্ত থাকার অভিযোগ তুলে ভারত ৭ মে ভোরে পাকিস্তানে প্রথম মিসাইল ছোড়ে। এর জবাবে পাকিস্তান পাল্টা মিসাইল ও বিমান হামলা শুরু করে। চারদিনব্যাপী এই সংঘর্ষে ব্যাপক তীব্রতা লক্ষ্য করা যায়। পরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার বাসভবনে হওয়া বৈঠক দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সংলাপের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে পারে। এটি পূর্ববর্তী উত্তেজনা প্রশমিত করতে এবং ভবিষ্যতে উত্তপ্ত সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। এছাড়া, এই বৈঠক দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় নতুন ধারা সৃষ্টি করতে পারে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, দুই দেশের শীর্ষ নেতাদের এ ধরনের সরাসরি সংলাপ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজরেও এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারস্পরিক বৈঠক এবং সংলাপ শক্তিশালী করলে ভবিষ্যতে সীমান্তে সংঘর্ষ কমানো সম্ভব হতে পারে এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।


