দিনাজপুর সদর উপজেলার রানীগঞ্জ মোড়ে যমুনা অটো রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণে তিন শ্রমিক নিহত এবং আরো ১৮ শ্রমিক দগ্ধ হওয়ার ঘটনায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম উদ্বেগ প্রকাশ করছে। এ বিষয়ে আজ ২০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সূত্র মতে, বয়লার বিস্ফোরণে দগ্ধদের মধ্যে দুই জন গতকাল সন্ধ্যায় এবং একজন আজ সকালে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তারা হলেন, রঞ্জিতা রানী রায় (৪০), মোকছেন আলী (৫০) এবং আরিফুল ইসলাম (৩০)।
এ ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি দগ্ধ ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদের শরীর ৫০ থেকে ৯০ ভাগ পুড়ে গেছে। দগ্ধদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন, মুন্না (৩২), রুস্তম (৪৫), রঞ্জিত (৫০), শফিকুল (২০), মুকুল (৪৪),শফিকুল ইসলাম (১৯), উদয় (৫০), এনামুল (৪০), দুলাল (৩৫), বীরেন (৩৯)।
আমরা জানি যে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৭৮.ক ধারায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি ব্যবহারের বাধ্যবাধকতায় বলা হয়েছে, শ্রমিকগণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা যন্ত্রপাতি সরবরাহ ও ব্যবহার নিশ্চিত করা ব্যতিত নিয়োগকারী কাউকে কর্মে নিয়োগ করতে পারবে না এবং কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের পেশাগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য নিয়োগকারী প্রত্যেক শ্রমিককে কাজের ঝুঁকি সম্পর্কে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতন করবে। কিন্তু দিনাজপুরে যমুনা অটো রাইস মিলে বয়লার বিস্ফোরণে শ্রমিক হতাহতের ঘটনায় এটি প্রতীয়মান হয় যে, সেখানে শ্রম আইনের এই বিধান যথাযথভাবে অনুসরন করা হয় নি।
এমতাবস্থায় শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম শ্রম আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ ‘কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর’ এর মাধ্যমে উপরোক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছে। পাশাপাশি ঘটনায় নিয়োগকারীসহ দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি বিধান করা, নিহত শ্রমিক পরিবার এবং আহত শ্রমিকদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি সারাদেশে শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে শ্রম আইন বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।