জাতিসংঘের তথ্য ২০৩০ সালে বিশ্বে জনসংখ্যা হবে সাড়ে ৮০০ কোটি

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে শনিবার জাতিসংঘের প্রকাশিত বৈশ্বিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, ২০৩০ সাল নাগাদ পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে ৮০০ কোটিতে। জাতিসংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে পৃথিবীর জনসংখ্যা ৭৭০ কোটি। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, আল-জাজিরা

বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ১০০ কোটি হতে কয়েক হাজার বছর সময় লেগেছিল। কিন্তু এখন তা দ্রম্নতই বাড়ছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট জনসংখ্যা হবে ৯৭০ কোটি এবং ২১০০ সালে তা এক হাজার ৯০ কোটিতে গিয়ে ঠেকবে।

২০১১ সালে বিশ্বে মোট জনসংখ্যা ৭০০ কোটিতে পৌঁছায়। আর এখন সেটা ৭৭০ কোটি। অর্থাৎ, গত প্রায় ৯ বছরে বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আরও ৭০ কোটি মানুষ যুক্ত হয়েছে। আগামী ১০ বছরে তা ৮০ কোটির বেশি হবে বলে জানাচ্ছে জাতিসংঘ। এর নেপথ্যে প্রজননকালীন মৃতু্যর হার হ্রাস, প্রজনন হার বৃদ্ধি, নগরায়ন এবং বিস্তৃত পরিসরে অভিবাসীর মতো বিষয়গুলোকে কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। নিকট অতীতের চেয়ে এখন মানুষের প্রজনন হার বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মানুষের গড় আয়ুও বেড়েছে।

জাতিসংঘের ‘গেস্নাবাল পপুলেশন ট্রেন্ড’ অনুযায়ী, ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকে নারীরা গড়ে চার দশমিক পাঁচটি সন্তান জন্ম দিতেন। কিন্তু ২০১৫ সালে এসে এই হার দাঁড়িয়েছে দুই দশমিক পাঁচে। তবে বৈশ্বিক গড় আয়ুও বেড়েছে। ১৯৯০-এর দশকে বিশ্বের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৬৪ দশমিক ছয় বছর। ২০১৯ সালে তা ৭২ দশমিক ছয় বছর। এছাড়া নগরায়নের বিষয়টিও ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বে মোট জনসংখ্যার মধ্যে গ্রামের চেয়ে শহরাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা বেশি ছিল। জাতিসংঘ বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ বসত হবে শহরে।

গত ৭০ বছরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির চিত্রে দেখা যায়, ১৯৫০ সালে বিশ্বের জনসংখ্যা ছিল ২৫০ কোটি। ১৯৫০ সালেও বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ছিল চীন। দেশটির জনসংখ্যা ছিল ৫৫ কোটি ৪৪ লাখ। এরপরে ছিল ভারত। এর জনসংখ্যা ছিল ৩৭ কোটি ৬৩ লাখ।

২০২০ সালে এসে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশের শীর্ষে বহাল রয়েছে চীন। এর জনসংখ্যা ৭০ বছরে ৮৮ কোটি বেড়ে হয়েছে ১৪৩ কোটি। ভারতে জনসংখ্যা বেড়েছে ১০০ কোটি। এখন দেশটির জনসংখ্যা ১৩৭ কোটি।

বিশ্বের জনসংখ্যা ১০০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছায় ১৮০৪ সালে। এরপর ২০০ কোটিতে বাড়তে সময় নেয় ১২৩ বছর। অর্থাৎ, ১৯২৭ সালে ২০০ কোটি জনসংখ্যা হয় বিশ্বের। এরপর মাত্র ৩৩ বছরে, অর্থাৎ ১৯৬০ সালে ৩০০ কোটিতে পৌঁছে যায় বিশ্বের জনসংখ্যা। মাত্র ১৪ বছরে (১৯৭৪ সালে) ছাড়ায় ৪০০ কোটি। এরপর আরও দ্রম্নত বাড়তে, মাত্র ১৩ বছরে (১৯৮৭ সালে) পৌঁছে যায় ৫০০ কোটিতে। ১২ বছরের (১৯৯৯ সালে) মধ্যে ৬০০ কোটিতে। ৭০০ কোটির মাইলফলকে পৌঁছায় ২০১১ সালে। অর্থাৎ ১২ বছরের মধ্যে। আর এখন জনসংখ্যা ৭৭০ কোটি। এই ৭০ কোটি বেড়েছে মাত্র ৯ বছরে। জাতিসংঘের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ৮০০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বিশ্বের জনসংখ্যা।

আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংবাদ