অনলাইন ডেস্ক
গত ৪৮ ঘণ্টায় পাকিস্তানে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে কমপক্ষে ২৯ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছে। বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বেশ কয়েকটি বাড়ি ধস এবং ভূমিধসের কারণে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে।
প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ রবিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিজনিত কারণে অন্তত ২৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে উপকূলীয় শহর গোয়াদর প্লাবিত হওয়ার পর পাঁচজন মারা গেছে।
কর্তৃপক্ষ নৌকা ব্যবহার করে প্রায় ১০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে।
এ ছাড়া জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ একটি পৃথক বিবৃতিতে জানিয়েছে, পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরেও হতাহতের ঘটনা এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় জরুরি ত্রাণ সরবরাহ করা হচ্ছে এবং অবরুদ্ধ মহাসড়ক থেকে ধ্বংসাবশেষ অপসারণ করতে ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তারা।
উত্তর গিলগিট বাল্টিস্তান অঞ্চলের মুখপাত্র ফয়জুল্লাহ ফারাকের মতে, পাকিস্তানকে চীনের সঙ্গে সংযুক্ত করা কারাকোরাম হাইওয়ের কিছু জায়গা এখনো ভূমিধসের কারণে অবরুদ্ধ রয়েছে।
আবহাওয়ার কারণে কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের উত্তরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে। গত সপ্তাহে ভারি বর্ষণের কারণে বেশ কয়েকজন দর্শনার্থী সেখানে আটকা পড়েছিলেন। দেশটিতে তীব্র তুষারপাতও হয়েছে।
জাতিসংঘের মতে, বিশ্বব্যাপী কার্বন নিঃসরণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তানের অবদান প্রায় শূন্য থাকা সত্ত্বেও জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ১০টি দেশের মধ্যে রয়েছে এটি।
এ বছর পাকিস্তানে শীতকালীন বৃষ্টিতে অস্বাভাবিক বিলম্ব দেখা যাচ্ছে, নভেম্বরের পরিবর্তে ফেব্রুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। বর্ষা ও শীতের বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতিবছর পাকিস্তানে ক্ষতি হয়।
২০২২ সালে জলবায়ু প্ররোচিত অস্বাভাবিক বৃষ্টি ও বন্যা দরিদ্র পাকিস্তানের অধিকাংশ অঞ্চলকে বিধ্বস্ত করেছিল, প্রায় এক হাজার ৮০০ মানুষ মারা গিয়েছিল, প্রায় ৩৩ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করেছিল এবং প্রায় ৮০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। সে বছর বৃষ্টি ও বন্যা দেশটির অর্থনীতিতে বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করেছে এবং কিছু এলাকার মানুষ, যারা তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে, তারা এখনো অস্থায়ী বাড়িতে বসবাস করছে।
সূত্র : আলজাজিরা