আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সম্প্রতি বাংলাদেশে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর জনমনে উদ্বেগ বাড়ায়। এই প্রেক্ষাপটে প্রতিবেশী দেশ ভারত নতুন ভূমিকম্প মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যাতে পুরো হিমালয় অঞ্চলকে প্রথমবারের মতো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ভারতের ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (BIS) কোডের তথ্য ব্যবহার করে তৈরি নতুন মানচিত্রে আগের মানচিত্রের তুলনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। পূর্বে হিমালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ধরা হয়নি, তবে নতুন তালিকায় পুরো হিমালয়কে ৬ নম্বর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই তালিকায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্য, যেগুলোকে “সেভেন সিস্টার্স” বলা হয়, সরাসরি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের মধ্যে স্থান পেয়েছে।
নতুন ভূমিকম্প মানচিত্রের প্রভাব বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা যেমন সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই এলাকাগুলোতে ভারতের হিমালয় অঞ্চলের ভূমিকম্পপ্রবণতার প্রভাব পড়তে পারে এবং স্থানীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা ও নির্মাণ খাতে প্রস্তুতি আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
মানচিত্র অনুযায়ী, ভারতের প্রায় ৬১ শতাংশ এলাকা এখন ভূমিকম্পপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত। ইন্ডিয়ান-প্লেট ও ইউরেশিয়ান-প্লেটের সংঘর্ষ এবং তাদের সরলাভাবে স্থানান্তরের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। হিমালয় অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ ফল্টলাইনের উপস্থিতি বিশেষভাবে এই অঞ্চলে সর্বোচ্চ ঝুঁকি তৈরি করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন মানচিত্র ভারতের নীতি-নির্ধারক এবং নির্মাণ খাতকে ভূমিকম্প-প্রতিরোধী কাঠামো তৈরি এবং ঝুঁকি হ্রাসে আরও সতর্ক হতে প্ররোচিত করবে। এছাড়া স্থানীয় সরকার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর জন্য এটি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও জরুরি প্রস্তুতির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে।
বাংলাদেশেও নতুন তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তবর্তী জেলা এবং ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলোতে নির্মাণ ও অবকাঠামোগত কার্যক্রমের ক্ষেত্রে সতর্কতা নেওয়া জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধি, জরুরি প্রতিক্রিয়া প্রস্তুতি এবং স্থাপত্য নকশায় ভূমিকম্প-প্রতিরোধী মানদণ্ড প্রয়োগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।


