সড়কে গড় গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে

সড়কে গড় গতিতে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে

সড়কে গড় গতির হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান নিচের দিকে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চিত্র। প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্বের ১৬২টি দেশের মধ্যে মাত্র তিনটি দেশের ওপরে বাংলাদেশ।

গুগল ম্যাপ ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলোর মধ্যে সড়কপথে যাতায়াতের জন্য প্রয়োজনীয় গড় সময় নির্ণয় করেন আইএমএফের কর্মীরা। এক্ষেত্রে যেসব শহরের দূরত্ব ন্যূনতম ৮০ কিলোমিটার কেবল সেগুলোই হিসেবে নেওয়া হয়, তালিকায় বাদ দেওয়া হয় নগররাষ্ট্রগুলোকে।

গত ২০ মে প্রকাশিত আইএমএফের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্বের দ্রুততম সড়কগুলো রয়েছে ধনী অর্থনীতির দেশগুলোতে। আর ধীরগতির সড়ক দেখা গেছে দরিদ্র দেশগুলোতে। এটি তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে অন্যতম বাধা বলে মনে করা হয়। বিশেষ করে বিশ্বের সবচেয়ে ধীরগতির সড়ক রয়েছে পাহাড়ি দেশ ভুটানে। তাদের গড় গতি ঘণ্টায় ৩৮ কিলোমিটার।

এরপর নেপাল ও পূর্ব তিমুরের সড়কে গাড়ির গড় গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। বাংলাদেশ ও হাইতির সড়কে গড় গতি একই-মাত্র ৪১ কিলোমিটার। দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কার সড়কে গড় গতি ৫০ কিলোমিটার, আফগানিস্তানে ৫৭ কিলোমিটার, ভারতে ৫৮ কিলোমিটার ও পাকিস্তানে ৮৬ কিলোমিটার। মালদ্বীপের প্রধান শহরগুলো সড়কপথে সংযুক্ত না হওয়ায় তাদের গড় গতি হিসাব করা হয়নি।

এদিকে, সড়কে গড় গতির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে পর্তুগাল, সৌদি আরব, কানাডা, স্পেন, ফ্রান্সের মতো উন্নত অর্থনীতির দেশগুলো। আর ধীরগতির সড়ক দেখা গেছে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে। সড়কের এই ধীর গতিই তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথে অন্যতম বাধা বলে মনে করা হয়।

আইএমএফের গবেষণা বলছে, ভ্রমণকালের সঙ্গে সড়কের গুণগত মানের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তবে মাত্র একটি পরিসংখ্যানে রাস্তার গুণমান তুলে ধরা কঠিন। উদাহরণস্বরূপ-গতির হিসাবে রাস্তার নিরাপত্তা, ট্রেনের মতো বিকল্প পরিবহনের প্রাপ্যতা এবং পিক আওয়ার বা চূড়ান্ত মৌসুমে যানজটের (যখন কৃষকেরা তাদের পণ্য বাজারে পৌঁছাতে একযোগে রাস্তায় নামেন) মতো বিষয়গুলো যোগ করা যায় না। তারওপর, বৈচিত্র্যময় ও বিরূপ ভূখণ্ডে মানসম্পন্ন রাস্তা নির্মাণের ইঞ্জিনিয়ারিং চ্যালেঞ্জগুলোও সম্পূর্ণরূপে তুলে ধরা সম্ভব হয় না।

তবু এই সাধারণ পরিসখ্যানটি নীতিনির্ধারক ও পরিকল্পনাকারীদের সমকক্ষ দেশগুলোর তুলনায় তাদের সড়কের মান মূল্যায়ন এবং ভবিষ্যৎ নির্মাণ খরচ নির্ধারণে সহায়তা করতে পারে। এটি দেশগুলোকে সড়কের প্রতিবন্ধকতাগুলো কাটিয়ে উঠতে এবং মানুষ ও পণ্য পরিবহন আরও দ্রুততর করার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় উন্নতি করতেও সাহায্য করবে।

জাতীয়